ডিএমপি নিউজঃ প্রথমে মোবাইলে অচেনা নম্বর থেকে মিসকল। তারপর প্রেম। আর এরপর প্রেমের টানে বাড়ি ছেড়ে সবকিছু হারিয়ে এখন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি রাজধানীর দারুসসালামের।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল সিংগুরিয়া মহিলা বিএম কলেজ এর ১ম বর্ষের এক ছাত্রীর সাথে মোবাইলে মিসকলের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বাড্ডার মোঃ শরিফুল ইসলাম ওরফে সজীব (২৪) এর।পরবর্তী সময়ে বিয়ের কথা বলে গত ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা হতে উক্ত ছাত্রীকে ঢাকায় নিয়ে আসে সজীব। গাবতলীতে পৌঁছাতে সন্ধ্যা হওয়ায় তারা দারুসসালামের একটি হোটেলে ওঠে। সেখানে সজীব মেয়েটির সাথে দৈহিক মেলামেশা করতে চাইলে সে বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত কোন দৈহিক মেলামেশা করবে না বলে জানায়, জোর করলে চিৎকার এবং হোটেলের লোকজন ডাকার কথা বলে।
এভাবেই কোনমতে একটি রাত পার করে সেখানে। পরদিন সকালে মেয়েটি ফ্রেস হওয়ার জন্য বাথরুমে গেলে মেয়েটির সাথে করে নিয়ে আসা ৩০ হাজার পাঁচশ টাকা ও স্বর্ণের কানের দুল সজীব নিয়ে নেয়।মেয়েটি বাথরুম থেকে বের হলে সজীব বিয়ের জিনিসপত্র কেনা ও ঘর ভাড়া করার কথা বলে তাড়াহুড়া করে হোটেল থেকে নিচে নেমে আসে এবং টাকা ভাংতি করা কথা বলে পাশের দোকানে গিয়ে চম্পট দেয়।
অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হচ্ছিল না মেয়েটির। সজীবের মোবাইলে ফোন দিয়ে দেখে ফোন বন্ধ। মেয়েটির মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। সে গাবতলী বাসটার্মিনাল এলাকায় হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে সজীবকে। মেয়েটির এই অবস্থা থেকে হুমায়ুন কবির ওরফে সাকিল (২৮) নামে আরেক ব্যক্তি তার বিষন্নতার কথা জিজ্ঞেস করে। মেয়েটি সরল বিশ্বাসে পূর্বের ঘটনা বলে এবং গাজীপুর বাসের কথা তাকে জিজ্ঞেস করে।সারাদিন ঘোরাঘুরিতে ক্লান্ত মেয়েটি মাথা ব্যাথায় ভুগতে থাকে। তখন সাকিল তাকে ব্যথা সারার জন্য ট্যাবলেট খাওয়ায় এবং দুপুর দেড়টার দিকে তাকে নিয়ে আরেকটি হোটেলে ওঠে। এরপর সেখানে তাকে রুটি খাওয়ায় এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। যখন জ্ঞান ফেরে ততক্ষণে সাকিল সটকে পড়ে।
পরবর্তী সময়ে মেয়েটি তাকে খুঁজতে যেয়ে রাস্তায় অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখানকার জীবন নামের এক সিকিউরিটি গার্ড তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। মেয়েটি এখন সেখানে চিকিৎসাধীন আছে।
এই ঘটনায় দারুসসালাম থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত সজীবের কাছ থেকে পুলিশ ১৭ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। গ্রেফতারকৃত উভয়ই বিজ্ঞ আদালতে এই ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান করেছে।