দেশটিতে গত ৩ মাসে ২১ হাজার গুজব ছড়িয়েছে। এই ‘গুজব’ ঠেকাতে এখন টেলিভিশনে সতর্কতামূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এক জনসমাবেশে এই তথ্য তুলে ধরে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন। এরপর থেকে সতর্কবার্তা দিয়ে টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে।
দেশটিতে সামাজিক নেটওয়র্কে সর্বশেষ ছড়িয়েছিল যে, একটি মানব পাচারকারী দল তিনটি শিশুকে কায়রোতে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর হত্যা করেছে। এটি প্রত্যাখান করে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় একটি বেসরকারি টেলিভিশনে। সেই বিজ্ঞাপনে নিরাপত্তা বাহিনীকে উদ্ধৃত করে প্রচারণাটিকে গুজব হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
সামাজিক মাধ্যমে যা দেখবেন, তার সবকিছু বিশ্বাস করবেন না। এই বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় একটি বেসরকারি টেলিভিশনে। মিশরে টেলিভিশনে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘সামাজিক নেটওয়ার্কে আপনি যা দেখবেন,তার সবটাই বিশ্বাস করবেন না। সামাজিক নেটওয়ার্কে কোনো খবর শেয়ার করার আগে তার সত্যতা যাচাই করে নিন। খবর জানার জন্য বিশ্বাসযোগ্য বা গ্রহণযোগ্য মাধ্যমের উপর নির্ভর করুন।’
আরেকটি বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়েছে মিশরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে। এই বিজ্ঞাপনে ১০ দিনের একটি সময়সীমা ধরে সেই সময়ে সামাজিক নেটওয়ার্কে আটটি ‘গুজব’ ছড়ানোর বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যম মিথ্যার একটি প্ল্যাটফর্ম বলেও বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। যে আটটি গুজবের কথা বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তার একটি হচ্ছে, মিশরের একটি তহবিলের আওতায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ বা সম্পত্তি বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে।
এটিকে গুজব হিসেবে উল্লেখ করে বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করাই এই তহবিলের লক্ষ্য এবং সেটাই তারা করছে।সামাজিক মাধ্যমে আরেকটি ঘটনা প্রচার করা হয়েছিল যে, সুয়েজ খালে ছয়টি জাহাজের সংঘর্ষ হয়েছে। কিন্তু সেখানে এ ধরণের কিছুই ঘটেনি বলে বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল সিসি সামাজিক নেটওয়ার্কে গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে যে প্রচারণায় চালাচ্ছেন, দেশটির সংবাদমাধ্যমও একই ধরণের প্রচারণায় নেমেছে। গুজব দেশকে ধ্বংস করে দিতে পারে বলে মি: সিসি যে বক্তব্য দিয়েছেন, পত্রিকাগুলো তা গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করেছে। গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে মি: সিসি’র হুঁশিয়ারীকে মিশরের সংবাদমাধ্যম প্রধান শিরোনাম হিসেবেও প্রকাশ করেছে।
একটি বেসরকারি পত্রিকায় প্রধান শিরোনাম করা হয়েছে, ‘সিসি: তিন মাসে আমরা ২১ হাজার গুজবের মুখোমুখি হয়েছি।’
তারা সরকারি কর্মকর্তা এবং বিশ্লেষকদের সাক্ষাৎকার প্রচার করছে, তাতে গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে বক্তব্য থাকছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে একটি ওয়েবসাইট বলেছে, যুবকদের মাঝে হতাশা সৃষ্টির টার্গেট নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সরকারের মিডিয়া এবং গুজব মনিটরিং ইউনিটের পরিচালক নাইম সাদ বলেছেন, তাদের টিম থেকে সার্বক্ষণিকভাবে সামাজিক নেটওয়ার্কে গুজব চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং প্রতিটির জবাবও তুলে ধরা হচ্ছে।