ডিএমপি নিউজ: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার রায় দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাথে জড়িতদের আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। এখন তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএসএ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান, এমপি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য শেখ কবির হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বিপিএএ ও ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম(বার), পিপিএম।
অনু্ষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার), অতিরিক্ত আইজিপি (গ্রেড-১), স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বাংলাদেশ পুলিশ ও সভাপতি, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিপিএসএ’র সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার)।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজন্ম আর পথ হারাবে না। প্রজন্মের পর প্রজন্ম মাথা উঁচু করে বলবে, আমরা বাঙালি। এটাই আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন।
তিনি বলেন, ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি। ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল।আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হারাতে চাই না।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন একের পর এক বাস্তবায়ন করছেন। তিনি বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন, আলোকিত করেছেন।
মুখ্য আলোচক শেখ কবির হোসেন বঙ্গবন্ধুর সাথে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু মানুষকে ভালোবাসতেন, বিশ্বাস করতেন। তিনি সারাজীবন সাধারণ মানুষকে ভালোবাসে গেছেন, তাদের জন্য কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ওতপ্রোতভাব জড়িত। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকার সময় জেল থেকে যেসব নির্দেশনা দিতেন বঙ্গমাতা তা নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছে দিতেন। বঙ্গমাতা বিভিন্নভাবে বঙ্গবন্ধুকে সহযোগিতা করেছেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান শেখ কবির হোসেন।
জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু জনমানুষের মুক্তির কথা চিন্তা করেছেন, নিজের পরিবার ত্যাগ করেছেন এবং সারাটি জীবন শুধু কষ্টই করেছেন এদেশের মানুষকে শান্তিতে রাখার জন্য।
তিনি বলেন, আমাদের উচিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজে হাত দিয়েছেন সেই কাজকে ত্বরান্বিত করা, তাঁর হাতকে শক্তিশালী করা। তিনি বলেন, এই শোককে আমরা শক্তিতে রূপান্তর করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করি- এটাই হোক আজকের অঙ্গীকার।
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেন, বঙ্গবন্ধু ভালবাসা দিয়েই মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন, দেশ স্বাধীন করেছিলেন।বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে সারাজীবন ভালবেসে গেছেন। তিনি কখনো চিন্তা করেননি বাঙালিরা তাঁকে হত্যা করবে।
আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দেশ আজ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। এখন পাকিস্তান বলছে উন্নতি করতে হলে বাংলাদেশকে অনুসরণ করা দরকার।
পুলিশ প্রধান বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে দেশের প্রতিটি পুলিশ সদস্যের মনোবল চাঙ্গা রয়েছে। দেশবিরোধী যে কোন চক্রান্ত রুখে দিতে বাংলাদেশ পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই। বঙ্গবন্ধু মহানায়ক বলেই আজ ঘরে ঘরে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোচনা হয়।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু রাজারবাগে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন ‘তোমরা জনগণের পুলিশ’। জনগণের পুলিশ হতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব পেশাদারিত্বের সাথে পালন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ যেকোনো চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে যাবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদতবরণকারী বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতির জোটের সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মোঃ কামরুল আহসান; র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বিপিএম(বার), পিপিএম; ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, বিপিএম(বার), পিপিএম-সহ অন্যান্য অতিরিক্ত আইজিপিগণ; ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ; ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।