এ বছর রাজশাহীতে বৃষ্টির গতিপ্রকৃতি দেখে বোঝাই দায় ছিল আষাঢ় মাস চলছে। মাঝেমধ্যে ছিটেফোঁটা বৃষ্টিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে নগরবাসীকে। তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরমের দাপটে অসহনীয় হয়ে উঠেছিল রাজশাহীর জনজীবন। তবে একেবারেই নিরাশ করেনি প্রকৃতি। আষাঢ়ের বিদায়বেলায় শুরু হয়েছে শ্রাবণধারা। এতেই স্বস্তি ফিরেছে উত্তরের এই খরাপ্রবণ শহরে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় আষাঢ়ের শেষ তিন দিন থেকে শ্রাবণের শুরুতে ভারি বর্ষণ হবে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল এমনটাই।
এ সময় আষাঢ়ের শুরুতে বৃষ্টিহীন থাকা উত্তরাঞ্চলেও থাকবে টানা বৃষ্টি। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়ার অধিদপ্তরের পূর্বাভাস যেন সত্যি হয়েছে! মঙ্গলবার রাত ১টা ২০ মিনিট থেকে রাজশাহীতে ভারি বর্ষণ শুরু হয়েছে। বুধবার দুপুর গড়িয়ে গেলেও তা থামার নাম নেই। ফলে রেকর্ড বৃষ্টিতে দীর্ঘ দিন পর যেন বর্ষার চিরচেনা রূপ দেখতে পেল রাজশাহীবাসী। আকাশের মেঘপুঞ্জ থেকে এখন যেন ঝরনা হয়েই বৃষ্টি নামছে ধরায়। মনে হচ্ছে এতো দিনেই হয়তো এসেছে কদম-কেয়া ফোটার দিন। এসেছে নববর্ষার সিঞ্চনে তাপবিদগ্ধ তৃষিত ধরার সিক্ত হওয়ার দিন।
তবে শেষ আষাঢ়ের এই টানা বর্ষণে কষ্টেরও শেষ নেই। টানা বর্ষণের কারণে এরই মধ্যে রাজশাহী শহরের নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে কাকভেজা হয়েই সকাল থেকে কাজ-কর্ম করতে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষদের। অনেক এলাকায় পয়ঃনিষ্কাশন ড্রেনের পানি উপচে একাকার হয়ে গেছে। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস বলছে, দীর্ঘ চার বছর পর একটানা সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে রাজশাহীতে। এমন বর্ষণ আর এই কয়েক বছরের মধ্যে হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাত ১টা ২০ মিনিট থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১১২ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে। তবে এখনও বৃষ্টি চলছে। দিন শেষে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়বে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, একটানা বৃষ্টির হিসাবে চার বছর পর এটিই রেকর্ড বৃষ্টিপাত। এর আগে ২০১৩ সালের পয়লা সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ৯৯ মিলিমিটার। এরপর ২০১৪ সালের ২৭ মে রেকর্ড করা হয়েছিল ৯৮ মিলিমিটার, ২০১৫ সালের ২৬ জুন রেকর্ড করা হয়েছিল ১০০ মিলিমিটার।