মানি লন্ডারিংও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রমে বাংলাদেশ অসামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।বাসেল এন্টি মানি লন্ডারিং (এএমএল) সূচকে বাংলাদেশ ২০১৭ সালে ২৮টিদেশকে পেছনে ফেলে র্যাংকিংয়ে ৫৪ নম্বর ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হতে ৮২ নম্বরে উঠে এসেছে।এই সূচকে সবচেয়ে দ্রুত উন্নয়নকারী ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ।
গত ১৬ আগস্ট সুইজারল্যান্ডভিত্তিক দ্যা বাসেল ইন্সটিটিউট অন গর্ভানেন্স বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন ঝুঁকি নিরূপণপূর্বক ২০১৭ সালের ‘বাসেল এএমএল সূচক–২০১৭’ প্রকাশ করে।
সূচক অনুযায়ী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে রয়েছে ইরান, আফগানিস্তান এবং সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হলো ফিনল্যান্ড।মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন ঝুঁকির নিরিখে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের মধ্যে আফগানিস্তানের অবস্থান ২ নম্বরে, মিয়ানমার ১৩, নেপাল ১৪, শ্রীলংকা ২৫, পাকিস্তান ৪৬, বাংলাদেশ ৮২ এবং ভারত ৮৮ নম্বরে রয়েছে।আর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যথাক্রমে ১১৬ ও ১১৮ নম্বরে রয়েছে।
প্রতিবছরের ন্যায় এশীয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজে) ২০১৬ সালে যে মিউচ্যুয়াল ইভালুয়েশন রিপোর্ট তৈরি করেছে, সেখানে মানি লন্ডারিংও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রমে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে বলে উল্লেখ করা হয়।যা বাসেল এএমএল সূচকে বাংলাদেশকে দ্রুত ওপরের দিকে উঠে আসতে বিশেষ সহায়ক হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক অঙ্গীকার, আন্তঃসংস্থার কাজের সমন্বয়, আর্থিক খাতে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং মানিলন্ডারিংও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রমে বাংলাদেশ সরকারের পর্যাপ্ত লোকবল ও অর্থের সংস্থান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ।
এপিজির মিউচ্যুয়াল ইভালুয়েশন রিপোর্ট মোতাবেক বাংলাদেশ এফএটিএফ এর ৪০টি সুপারিশের বিপরীতে ৬টিতে কমপ্লায়েন্ট,২২টিতে অধিকাংশ কমপ্লায়েন্ট এবং ১২টিতে আংশিক কমপ্লায়েন্ট রেটিং পেয়েছে।বাংলাদেশ এফএটিএফ এর ৪০টি সুপারিশের সবকটিই বাস্তবায়ন করেছে।
বাসেল এএমএল সূচক মোতাবেক দ্রুত উন্নয়নকারী ১০টি দেশের মধ্যে রয়েছে সুদান, তাইওয়ান, ইসরাইল, বাংলাদেশ, জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, লুক্সেমবার্গ, লাটভিয়া ও গ্রিস।
সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক সংস্থাটি গত ছয় বছর যাবৎ কোনো একটি দেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ঘাটতি, সরকারি অর্থায়ন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার ঘাটতি, উচ্চ পর্যায়ে দুর্নীতির ধারণা সূচক, আর্থিক মানদ– ও স্বচ্ছতা এবং দুর্বল রাজনৈতিক অধিকার ও আইনের শাসন; এই পাঁচটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বাসেল এএমএল সূচক নির্ধারণ করে থাকে।