ডিএমপি নিউজ : ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির অঙ্গ-সংগঠনের এক শীর্ষ ছাত্রনেতার নির্দেশে মুগদায় বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপি কর্মী মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট ও মুগদা থানা পুলিশের একটি যৌথ দল।
সিটিটিসি সূত্রে জানানো হয়, চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় গত বুধবার (১ নভেম্বর) বেলা ১০:৪৫টার দিকে মুগদার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ শাখার রাস্তার বিপরীত পাশে মিডলাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে কতিপয় দুস্কৃতিকারীরা যাত্রীবেশে উঠে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেখান থেকে পালানোর সময় জনগণের সহযোগিতায় আল আমিন নামের একজনকে হাতে-নাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বাসের মালিক ওইদিন মুগদা থানায় একটি মামলা করেন। গ্রেফতারকৃত আল আমিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্থানীয় বিএনপির ঊর্ধ্বতন নেতাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় তাদের দলীয় নেতা মিজানসহ অন্য সদস্যরা বাসে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করে।
সিটিটিসি সূত্র জানায়, আল আমিনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ডিএমপির সিটিটিসি ও মুগদা থানার একটি যৌথ দল আজ ভোরে গাজীপুরের বাসন এলাকা হতে এজাহারভুক্ত মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাসে আগুন দেওয়ার বিষয়ে স্বীকার করে মিজান জানায়, সে বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী। অবরোধের প্রথম দিন তার পূর্ব পরিচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের এক শীর্ষ ছাত্রনেতা তাকে ফোনে বাসে আগুন দেওয়ার নির্দেশ দেয় এবং জানায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং তারাও কাজ করছে। আরও বলে, যদি সে আগুন দিতে পারে তবে বিএনপি আর কয়দিন পর ক্ষমতায় এসে তাকে এমন টাকা পয়সার ব্যবস্থা করবে যে, তার আর কোন অভাব থাকবে না। পরে গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে সেই নেতা মিজানের দোকানে এসে তাকে পাশে ডেকে নিয়ে কমলাপুর থেকে মুগদা পর্যন্ত স্থানে বাসে আগুন দেওয়ার দায়িত্ব দেয় ও এক হাজার টাকা এবং এক বোতল পেট্রোল প্রদান করে। এরপর অভিযুক্ত মিজান তার অন্য সহযোগী আল আমিনসহ আরও দুইজনকে ডেকে নিয়ে কোথায়, কীভাবে আগুন দিবে তার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে। পরদিন বুধবার তারা চারজন গুলিস্থান এলাকায় একত্রিত হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মুগদা এলাকায় যায় এবং যাত্রীবেশে মিডলাইন পরিবহনের বাসটিতে উঠে সুযোগ বুঝে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে সে সেই ছাত্রনেতাকে ফোন করে আগুন দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। সেই ছাত্রনেতা তার বিকাশ অ্যাকাউন্টে তিন হাজার টাকা পাঠায় এবং আরও টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাকে কিছু দিন লুকিয়ে থাকার পরামর্শ দেয়। গ্রেফতার এড়ানোর জন্য গাজীপুরে এক বন্ধুর আত্মীয়ের বাসায় অবস্থানকালে পুলিশ মিজানকে সেখান থেকে গ্রেফতার করে।
এই ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।