হরিয়ানার সিরসায় ৮০০ একর জমির উপর তৈরি বিশাল ডেরা সচ্চা সৌদা। তার মধ্যেই শপিং মল, রেস্তোরাঁ, রিসর্ট, হাসপাতাল, মাল্টিপ্লেক্স, স্কুল-কলেজ, কারখানা— কী নেই সেখানে? দেশ-বিদেশে ছড়ানো প্রায় পাঁচ কোটি ভক্ত। শোনা যায়, বাবার মোট সম্পত্তির পরিমাণ নাকি প্রায় হাজার কোটি টাকা। এমনই সাম্রাজ্য ফেঁদে এত দিন সেখান থেকে নিজের রাজ্যপাট নিয়ন্ত্রণ করতেন বাবা রাম রহিম। কিন্তু দু’টি ধর্ষণ মামলায় বাবার ২০ বছরের জেল হওয়ায় আপাতত ‘অভিভাবক’হীন সেই ডেরা। কে হবেন এই বিপুল সম্পত্তির উত্তরাধিকারী? প্রশ্নটা ঘুরছে গত এক সপ্তাহ ধরেই। আর এই প্রশ্নের মাঝেই উঠে আসছে দু’টি নাম।
প্রথম নামটি যেন কিছুটা পূর্বপরিকল্পিতই ছিল। বাবার পালিতকন্যা হানিপ্রীত ইনসান। গুরমিত রাম রহিম সিংহের তিন মেয়ের অন্যতম তিনি। বাবার ছায়াসঙ্গীও বটে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর রাম রহিমকে গ্রেফতার করে রোহতকে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সব সময়েই বাবার সঙ্গী হিসেবে বছর ত্রিশের হানিকে তাঁর পাশেই দেখা গিয়েছিল। এমনকী, সাজা ঘোষণা হওয়ার পর সেই পালিতকন্যার সঙ্গেই জেলে থাকতে চাইলেন রাম রহিম। মেয়ে হানিও বাবার সঙ্গেই রাত কাটাতে চেয়ে আবেদন করেন বিচারকদের কাছে। যদিও সেই অনুমতি মেলেনি জেল কর্তৃপক্ষের তরফে।
ডেরা প্রধানের পদের আরও এক অন্যতম দাবিদার বিপাসনা ইনসান। তিনি ডেরার চেয়ারপার্সন। বছর পঁয়ত্রিশের এই শিষ্যা কলেজের পড়াশোনা শেষ করেই ডেরায় যোগ দিয়েছিলেন। পরে ডেরার নিজস্ব পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান দখল করে চেয়ারপার্সন হন তিনি। হানিপ্রীতের সঙ্গে এখন তিনিও রয়েছেন প্রধান হওয়ার দৌড়ে।
এই দুই কন্যা ছাড়া নিজেরও তিন ছেলেমেয়ে রয়েছে বাবা রাম রহিমের। মাত্র ১৭ বছর বয়সে হরজিৎ কৌরকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। চরণপ্রীত এবং আমনপ্রীত নামে দুই মেয়ে ও যশমীত নামে এক ছেলে রয়েছে বাবার। তিন ছেলেমেয়েই বিবাহিত। ছেলে যশমীত পেশায় ব্যবসায়ী। ২০০৭-এই বাবার সমস্ত সম্পত্তির মালিকানা পেয়েছেন ছেলে।
যদিও এখনও খাতায়কলমে ডেরার প্রধানের পদে রয়েছে বাবা রাম রহিমই। কিন্তু সকলেই জানেন, জেলে বসে এই বিশাল কর্মকাণ্ড সামলানো তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না। এখন কোন নারীর হতে ডেরার তরবারি উঠবে তা জানতে হয়তো অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু দিন।