কিলিয়ান এমবাপ্পেদের ফ্রান্স ট্রফি জিতলেও রাশিয়া বিশ্বকাপে তুলনামূলক ছোট দলগুলো যেমন পারফরম্যান্সের নজর কেড়েছে ঠিক তেমনি বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয়াও হতাশ করেছে ফুটবল ভক্তদের।
বিশ্বকাপের ২১তম আসর রাশিয়াতে মাসব্যাপী মহারণ শেষ। বিশ্বকে চমকে দিয়ে প্রথমবার ফাইনালে উঠেও শিরোপায় নাম লেখাতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। তাদের কাঁদিয়েই আরেক ইউরোপিয়ান দেশ ফ্রান্স দ্বিতীয়বারের মতো ফুটবল শিরোপা নিজেদের করে নিল। বিশ্বকাপ আসর শেষে চলছে হিসাব-নিকাশ। পার্থক্য করা হচ্ছে প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির হিসাব। আসুন জেনে নেয়া যাক বিশ্বকাপের আলোচিত ঘটনাগুলোর একাংশ।
ক্রোয়েশিয়ার ইতিহাস:
রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল পর্যন্ত গোল্ডেন বল পুরস্কারের দৌড়ে এগিয়ে থাকা হ্যারি কেনদের ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে পরাজিত করে বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনালে উঠে যায় ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্য ক্রোয়াটদের গ্রুপপর্ব থেকে অপরাজিত থাকা দলটিই ফাইনালের শিরোপা লড়াইয়ে এসে ফ্রান্সের বিপক্ষে ৪-২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়ে রানার্সআপ ট্রফি নিয়ে দেশে ফেরে।
ফেয়ার প্লে পয়েন্ট:
জাপান এবং সেনেগাল দুই দলের পয়েন্ট সমান। গোল ব্যবধানও এক। শেষ পর্যন্ত ফেয়ার প্লে পয়েন্টের ভিত্তিতে সেনেগালকে পেছনে ফেলে নকআউট পর্বে চলে যায় জাপান।
ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি:
রাশিয়া বিশ্বকাপে প্রথমবার ফ্রান্স-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ব্যবহার করা হয় ভিডিও অ্যাসিসটেন্ট রেফারি। নতুন প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েই ফ্রান্সকে পেনাল্টি দেন ম্যাচের রেফারি। দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্ডার গ্রিজম্যানকে ফেলে দিলেও প্রথমে পেনাল্টি দেননি তিনি। এক মিনিটের বেশি সময় খেলা চলার পর মত পরিবর্তন করেন রেফারি। সাহায্য নেন ভিডিও অ্যাসিসটেন্ট রেফারির। ভিডিওতে রিপ্লে দেখে এসে ফ্রান্সকে পেনাল্টি দেন উরুগুয়েন এই রেফারি। রাশিয়া বিশ্বকাপে সেই ম্যাচেই প্রথমবার গোল লাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
শিরোপা সেই চেনা ফ্রান্সের ঘরেই:
একটা বিশ্বকাপ জয়ের পর আরেকটা ট্রফি ঘরে তুলতে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হলো ফরাসিদের। ১৯৯৮ সালে প্রথমবার বিশ্বকাজ জেতা দলটি সদ্য শেষ হওয়া রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা জিতে নিল।
সুয়ারেজের ম্যাচের সেঞ্চুরি:
উরুগুয়ের তারকা স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ রাশিয়া বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে নিজের শততম ম্যাচ খেলার ইতিহাস গড়েন।
এক যুগ পর সেরা চারে ইউরোপের রাজত্ব:
সেই ২০০৬ সালের পর আবার চার ইউরোপীয় চার দল রাজত্ব দেখায় রাশিয়া বিশ্বকাপে। জার্মানি, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ও স্পেনের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের পেছনে ফেলে রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলে ইউরোপের চার দেশ ফ্রান্স, ক্রোয়েশিয়া, ইংল্যান্ড ও বেলজিয়াম
বয়স্ক ফুটবলার:
রাশিয়া বিশ্বকাপে ৪৫ বছর বয়সী ফুটবলার হিসেবে অংশ নিয়ে নতুন ইতিহাস গড়েন মিসরের গোলরক্ষক এসাম আল হাদারি। এর আগে ৪৩ বছর বয়সে বিশ্বকাপ খেলেছিলেন ফারিড মোনড্রাগন। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ অংশ নিয়েছিলেন কলম্বিয়ার এই ফুটবলার।
তারকাদের বিদায়:
বিশ্বকাপ শুরুর আগ থেকেই লিওনেল মেসিনির্ভর আর্জেন্টিনা, নেইমারদের ব্রাজিল, ইনিয়েস্তাদের স্পেন, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের লড়াইয়ের আগেই ছিটকে যায়।
বিশ্বকাপের অঘটন:
রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির বিদায় নেয়াটা ছিল অঘটন। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে পরাজিত হয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় ২০১৪ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ১৯৩৮ সালের পর রাশিয়া ফের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিতে হলো জার্মানদের।