ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্র আয় করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের সমনে। বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ নিতে চায় মিয়ানমার, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া। এজন্য একটি লিংক তৈরির কাজও শুরু হয়েছে।
ওই তিনটি দেশ সি-মি-উই-ফোর সাবমেরিন ক্যাবল থেকে সরাসরি ব্যান্ডউইথ নিতে আগ্রহী বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে প্রধান লিংক গ্রহণকারী দেশ হতে চায় মিয়ানমার।
জানতে চাইলে বাংলদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের কাছ থেকে ১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ নিতে চায়। ওই পরিমাণ ব্যান্ডউইথ মিয়ানমার, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া মিলে ব্যবহার করবে।’
তিনি জানান, সি-মি-উই-ফোর সাবমেরিন ক্যাবল থেকে লিংক তৈরির কাজ চলছে। সাবমেরিন ক্যাবল থেকে মিয়ানমার কাছে হওয়ায় লিংক তৈরির কাজ সহজ হবে। এই লিংক সরাসরি মিয়ানমারকে যুক্ত করবে। মিয়ানমার থেকে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া ব্যান্ডউইথ নেবে।
তিনি মনে করেন, এই লিংক তৈরি করে ব্যান্ডউইথ দেওয়া হলে মিয়ানমার, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া হবে বাংলাদেশের ব্যান্ডউইথের সবচেয়ে বড় বাজার।
প্রসঙ্গত, সি-মি-উই-ফোর সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এখন বাংলাদেশ পাচ্ছে ৩০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ। এর মধ্যে ব্যবহার হচ্ছে ২২০ জিবিপিএস, যা সরবরাহ করছে বিএসসিসিএল। তবে দেশে মোট ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের পরিমাণ ৪৪০ জিবিপিএস। বাকি ২২০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করছে দেশের ৬টি আইটিসি (ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল) প্রতিষ্ঠান যার পুরোটাই আমদানি নির্ভর।
এই পরিমাণ ব্যান্ডউইথ ৬টি আইটিসি ভারত থেকে আমদানি করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় ১০ জিবিপিএস ব্যান্ডইউথ রফতানি করছে।
অন্যদিকে, ভুটানের প্রস্তাবিত ২.৫ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ রফতানির উদ্যোগও এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এজন্য আগামী ২০ আগস্ট ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ভারতের কলকাতা যাচ্ছেন। তিনি সেখানে পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (পিজিসিআইএল) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে বিএসসিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘পিজিসিআইএল-এর ভুটান পর্যন্ত ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সংযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ চাইবে ওই ক্যাবল ব্যবহার করে ভুটানে ব্যান্ডউইথ পৌঁছতে। এখন দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।’ তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে ভুটান ২.৫ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ নিয়ে আমদানি শুরু করতে চায়। পরে প্রয়োজন অনুযায়ী তা বাড়তেও পারে।