ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া কার্যকর করতে ব্রিটেনকে ৩১ শে অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সময় বাড়ানোর আবেদনের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইইউ সদর দপ্তরে বুধবার বিকেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের নেতাদের সামনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আরো সময় চান।
সময়সীমা বাড়ানোর জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধের পর ইউরোপীয় নেতারা নিজেদের মধ্যে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা করেন। দীর্ঘ আলোচনার পর আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এ সময় বাড়ানো হয়।
এ সময়ের মধ্যে ব্রিটেন কিভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসবে সে উপায় নির্ধারণ করবে। তবে জুন মাসে এর অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইইউ থেকে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ কার্যকর করার কথা ছিল ২৯শে মার্চ। সেটি কার্যকর করতে না পারায় ১২ই এপ্রিল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ব্রিটেন কোন পথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসবে সেটি চূড়ান্ত করতে পারেনি দেশটির পার্লামেন্ট।
ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের একের পর এক প্রস্তাব বাতিল হয়েছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে। বুধবার ব্রাসেলস সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মে আবেদন করেছিলেন ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের সময়সীমা ৩০ শে জুন পর্যন্ত করার জন্য। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন সে সময়সীমা আরো চার মাস বাড়িয়ে ৩১ শে অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত করেছে।
এ সম্মেলনে সবচেয়ে কড়া ভাষায় কথা বলেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রো। তিনি বলেন, ৩০ শে জুনের মধ্যেই ব্রিটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাবার বিষয়টি কার্যকর করতে হবে।
তবে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল এবং ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক বিষয়টি নিয়ে নমনীয় ভাব দেখান। তারা দুজনেই চেয়েছেন ব্রেক্সিটের জন্য ব্রিটেনকে যাতে যথাযথ সময় দেয়া হয়, যাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাবার বিষয়টি ব্রিটেন পুনরায় চিন্তা করতে পারে।
যুক্তরাজ্য ৪০ বছরের বেশি সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে থাকার পর ২০১৬ সালের ২৩শে জুন একটি গণভোট নিয়েছিল। সেখানে সেদেশের নাগরিকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- যুক্তরাজ্যের কি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে থাকা উচিত, নাকি উচিত না? ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিল ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে,আর থাকার পক্ষে ছিল বাকি ৪৮ শতাংশ ভোট। কিন্তু সেই ভোটের ফলাফলের সাথে সাথেই ব্রেক্সিট হয়ে যায়নি।-বিবিসি