ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন ২০২০ অলিম্পিকের জন্য টাস্ক ফোর্স গঠন করে পদকের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন, তখনই নিলামে উঠল ভারতের প্রথম ব্যক্তিগত অলিম্পিক পদক। এর থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে!
স্বাধীনতার ১৯ বছর আগে ভারত অলিম্পিকে প্রথম পদক পেলেও ব্যক্তিগত ইভেন্টে দেশের প্রথম পদক এসেছিল ১৯৫২ হেলসিনকি অলিম্পিকে। মহারাষ্ট্রের কুস্তিগীর খাসাবা দাদাসাহেব যাদব প্রথম ব্যক্তিগত ইভেন্টে অলিম্পিকে ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। কিন্তু ৬৫ বছর পর সেই পদকই নিলামে তুলল তার পরিবার। তবে পারিবারিক আর্থিক কারণে নয়। কুস্তির প্রচারে ঐতিহাসিক পদক নিলামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিল যাদব পরিবার।
কিংবদন্তি কুস্তিগীরের ছেলে রঞ্জিত যাদব বলেন, বাবার ঐতিহাসিক ব্রোঞ্জ পদকটা নিলামে তোলা সত্যিই বেদনাদায়ক। কিন্তু বাবা’র নামে একটা অ্যাকাডেমি করার জন্য এছাড়া আমাদের কোনও উপায় নেই।
১৯২৮ আমস্টারডাম অলিম্পিকে প্রথম পদক পায় ভারত। হকিতে সোনা জেতে ভারত। কিন্তু এর ২৪ বছর পর ব্যক্তিগত ইভেন্টে প্রথম পদক জয়ের স্বাদ পায় ভারত। পুরুষদের ফ্রি-স্টাইল কুস্তিতে ব্রোঞ্জ জেতেন খাসাবা যাদব। মহারাষ্ট্রের ২৭ বছরের এই তরুণ নিজের খরচে অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন।
ব্যক্তিগত ইভেন্টে দেশকে প্রথম পদক এনে দেওয়া ক্রীড়াবিদকে জীবিত অবস্থায় সম্মান জানায়নি সরকার। খাসবা যাদবের পুত্র রঞ্জিত বলেন, আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত লাজুক। নিজের সাফল্য নিয়ে কখনই বড়াই করতেন না। ১৯৮৪ সালে বাবা মারা যান। জীবিত অবস্থায় বাবাকে কোনও সম্মান জানায়নি সরকার। মৃত্যুর ১৬ বছর পর বাবাকে অর্জুন পুরস্কার দেওয়া হয়। কিন্তু কেন বেঁচে থাকাকালীন বাবাকে সম্মান জানানো হল না?’
শুধু তাই নয়, বাবার নামে কুস্তি অ্যাকাডেমির করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও আজও তা হয়নি। রঞ্জিত বলেন, ২০০৯-এ জলগাঁও-এ এক কুস্তি প্রতিযোগিতায় এসে তৎকালীন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী দিলীপ দেশমুখ বলেছিলেন বাবার নামে সাতারা জেলায় একটি কুস্তি অ্যাকাডেমি করা হবে। আট বছর পর ২০১৩ সালে অ্যাকাডেমির জন্য ১.৫৮ কোটি টাকা মঞ্জুরও হয়। কিন্তু অ্যাকাডেমি আজও হয়ে ওঠেনি।