শনিবার ভারতে ৫-জি প্রযুক্তির সূচনা করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রতিশ্রুতি দিলেন, পঞ্চম প্রজন্মের এই মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবার বিদ্যুৎ গতির মধ্যে দিয়ে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নব যুগের সূচনা হবে। যেখানে হাতের মুঠোয় থাকবে এক অপার সম্ভাবনার সমুদ্র।
‘ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস’ (আইএমসি)-এর ২০২২ এর সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়েই শুরু হল দিল্লি, কলকাতার মতো কয়েকটি শহরে ৫-জি মোবাইল প্রযুক্তি। আগামী কয়েক বছরে ধাপে ধাপে তা ছড়িয়ে পড়বে গোটা দেশেই। সেই অনুষ্ঠানেই প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘‘একটা সময় ছিল যখন ২-জি, ৩-জি বা ৪-জি মোবাইল প্রযুক্তির জন্য ভারতকে অন্য দেশের দিকে মুখ চেয়ে বসে থাকতে হত। কিন্তু ৫-জি পরিষেবার সূচনার মধ্যে দিয়ে ভারত গোটা বিশ্বে এক অনন্য ইতিহাস তৈরি করেছে।’’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ডিজিটাল ইন্ডিয়ার প্রতি আমাদের মনোভাবের কারণেই ২০১৪-এ যেখানে দেশে মাত্র দুটি মোবাইল তৈরির সংস্থা ছিল তা এখন বেড়ে হয়েছে ২০০। ফলে মোবাইল ফোনের দামও কমেছে অনেকটা। প্রধানমন্ত্রী ভাষণে ঘুরেফিরে আসে দেশে ডেটা খরচের তুলনামূলক বিশ্লেষণ। বলেন, ‘‘এখন ভারতে মোবাইল ডেটার খরচ সর্বনিম্ন। ২০১৪-য় ১ জিবি ডেটার দাম যেখানে ছিল ৩০০ টাকা, সেখানে এখন তা মিলছে মাত্র ১০ টাকায়। এই কারণেই দেশবাসীকে প্রতি মাসে গড়ে ১৪ জিবি ডেটার জন্য খরচ করতে হচ্ছে মাত্র ১২৫ থেকে ১৫০ টাকা। ২০১৪-য় যে খরচ ছিল ৪,২০০ টাকা! এটা আসলে প্রযুক্তির গণতন্ত্রীকরণের মাধ্যমেই কেবল সম্ভব হয়েছে।’’
প্রদর্শনীর উদ্বোধনের পরে, প্রধানমন্ত্রী মোদী 5G কী করতে পারে তার অভিজ্ঞতা পেতে বিভিন্ন টেলিকম অপারেটর এবং প্রযুক্তি প্রদানকারীদের প্যাভিলিয়নে যান। তিনি রিলায়েন্স জিওর স্টল দিয়ে ঘোরা শুরু করেন। যেখানে তিনি জিও গ্লাসের মাধ্যমে প্রদর্শিত ‘ট্রু 5জি’ ডিভাইসগুলি দেখেন। টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং রিলায়েন্সের মালিক মুকেশ আম্বানি, ভারতী এয়ারটেলের সুনীল ভারতী মিত্তল এবং ভোডাফোন আইডিয়ার কুমার মঙ্গলম বিড়লার সঙ্গে তিনি দেশে এন্ড-টু-এন্ড 5G প্রযুক্তির তৈরির বিষয়ে বোঝার চেষ্টা করেছেন। এরপরে তিনি এয়ারটেল, ভোডাফোন আইডিয়া, সি-ডট এবং অন্যান্যের স্টল পরিদর্শন করেন।
প্রদর্শনীতে প্রধানমন্ত্রীর সামনে যে বিভিন্ন ব্যবহারের ক্ষেত্র প্রদর্শিত হবে তার মধ্যে রয়েছে নির্ভুল ড্রোন-ভিত্তিক কৃষিকাজ, উচ্চ-নিরাপত্তাযুক্ত রাউটার এবং এআই ভিত্তিক সাইবার হুমকি সনাক্তকরণ প্ল্যাটফর্ম, স্বয়ংক্রিয় যানবাহন, অ্যাম্বুপড – স্মার্ট অ্যাম্বুলেন্স, অগমেন্টেড রিয়েলিটি/ভার্চুয়াল রিয়েলিটি/ শিক্ষা এবং সিওয়েজ নিরীক্ষণ ব্যবস্থা, স্মার্ট-এগ্রি প্রোগ্রাম, স্বাস্থ্য ডায়াগনস্টিকস এবং অন্যান্য ব্যবস্থা।