অবশেষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) ত্যাগ করতে চলেছে ব্রিটেন। শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তিতে ভোটাভুটির মাধ্যমে সিলমোহর দিল ‘হাউজ অব কমনস’। সেখানে চুক্তির পক্ষে ভোট পড়ে ৩৫৮টি এবং বিপক্ষে ২৩৪টি। যার ফলে আগামী ৩১ ডিসেম্বর EU থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গেল। তবে এর আগে তুখোড় কূটনৈতিক বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে EU প্রতিনিধিদের আলোচনায় বসতে বাধ্য করেছিলেন বরিস।
তা কীভাবে এই জটিল কাজ সমাধান করেন বরিস বা ‘বজো’? জানা গিয়েছে, ব্রিটেনের বিগত সাধারণ নির্বচনের আগে বিভিন্ন মাধ্যমে EU প্রতিনিধিদের কাছে একটি নির্দিষ্ট বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন বরিস। ওই বার্তায় সাফ বলা ছিল যে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে EU প্রতিনিধিরা আলোচনায় না বসলে, ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচনের ডাক দেবেন বরিস। এবং নির্বাচনী ইস্তেহারে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসবেন তিনি। প্রথম দিকে একটু দোনামোনা করলেও শেষমেশ বরিসের জয়ের বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিত হয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এবার বরিস জনসনের গোপন নির্দেশে প্রস্তাবিত চুক্তিটি ইচ্ছাকৃতভাবে ডাচ দূতাবাসের মাধ্যমে EU সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। তারপর ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন ও বরিসের ফের ক্ষমতায় আসা। বাকিটা ইতিহাস।
নতুন বছরের শুরুতে ‘হাউজ অফ লর্ডস’-এ ব্রেক্সিট বিলটি পাশ হয়ে যাবে। তারপর এই বিচ্ছেদের জন্য গঠিত আলাদা দপ্তর তুলে নেবে ব্রিটিশ সরকার। তবে, EU ছাড়লেও ২০২০ সাল ১১ মাসের ‘ট্রানজিশন পিরিয়ড’ বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভবিষ্যতের কমপন্থা ঠিক করা নিয়ে আলোচনা চালাবে ব্রিটেন। ব্রাসেলসের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আদায় করতে না পারলেও আগামী বছরের ৩১ ডিসেম্বরের সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না। তবে ব্রেক্সিট কার্যকরী হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য এবং আবগারি নিয়ম মেনে চলবে ব্রিটেন। তবে EU পার্লামেন্টে ব্রিটেনের কোনও প্রতিনীধই থাকবেন না। এবং সেখানে নেওয়া কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত লন্ডন মানতে বাধ্য হবে না।