‘ব্রেইনওয়েভ সিগন্যাল’ বিশ্লেষণ করে পাসওয়ার্ড ও পিন হাতিয়ে নিতে পারে হ্যাকাররা, নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
মানুষের চিন্তা, আবেগ, আচরণ— সব কিছুর মূলে রয়েছে মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর মধ্যে যোগাযোগ। এই যোগাযোগের সময় একই সঙ্গে সৃষ্ট ইলেকট্রিক্যাল পালসের মাধ্যমে ব্রেইনওয়েভ তৈরি হয়। মাথার খুলিতে সেন্সর স্থাপনের মাধ্যমে ব্রেইনওয়েভ শনাক্ত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া রিভারসাইড আর বার্মিংহামের ইউনিভার্সিটি অফ অ্যালাবামা-এর গবেষকরা ইলেকট্রোয়েন্সেফ্যালোগ্রাফি (ইইজি) হেডসেট থেকে ডেটা সংগ্রহ করেছেন। এই হেডসেট মানুষের মস্তিষ্কের ভেতরে বৈদ্যুতিক কার্যক্রম শনাক্ত করে।
এই হেডসেটগুলো গেমারদের মধ্যে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, এগুলো ব্যবহার করে তারা তাদের মস্তিষ্কের সিগন্যালের মাধ্যমে গেমের চরিত্রগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন— বলা হয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট-এর প্রতিবেদনে।
কোনো গেমার যখন খেলছেন না তখনো ইইজি হেডসেটগুলো তার ব্রেইনওয়েভ পর্যবেক্ষণ করে। গেম থামিয়ে রেখে কোনো ব্যবহারকারী তার ইইজি হেডসেট পরিধানরত অবস্থায় যদি তাদের কোনো পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে যান, তবে তা হ্যাকাররা লঙ্ঘনের সুযোগ পেয়ে যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষণায় ১২ জনকে একটি কি-বোর্ড ব্যবহার করে দৈবচক্রে কিছু পিন ও পাসওয়ার্ড টাইপ করতে বলা হয়। এ সময় তারা একটি হেডসেট পরে ছিলেন। তারা দুইশ ক্যারেক্টার টাইপের পর, গবেষকদের তৈরি একটি অ্যালগরিদম অনুমান করা শুরু করে। এই অ্যালগরিদম ৪৩.৪ শতাংশ পিন ও ৩৭.৩ শতাংশ ছয় ক্যারেক্টারের পাসওয়ার্ড সঠিকভাবে অনুমান করতে সক্ষম হয়।
এই গবেষণার একজন গবেষক নিতেশ সাক্সেনা বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান এই ডিভাইস প্রতিদিনের ব্যবহারকারীদের জন্য বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করেছে। যাই হোক, প্রতিষ্ঠানগুলো যেহেতু আরো উন্নত মস্তিষ্ক-কম্পিউটার ইন্টারফেইস প্রযুক্তি বানাচ্ছে, সেক্ষেত্রে এগুলো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ নিরাপত্তা ও প্রাইভেসি হুমকিও সৃষ্টি করছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক মাইন্ড-রিডিং প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা সরাসরি ‘মস্তিষ্ক থেকে টাইপ করতে পারবেন’।
কোনো ব্যবহারকারী অ্যাকাউন্টে লগইন করা থাকা অবস্থায় সিগন্যাল যাতে বিপর্যস্ত হয়ে যায়, এমন প্রযুক্তি আনতে ইইজি হেডসেট নির্মাতাদের আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা।