নিউ ইয়র্ক থেকে ডালাসের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সাউথ ওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের বিমানটি মাটি থেকে ৩০ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থান করছিল। বিমানটি উড্ডয়নের পর ২০ মিনিট অতিবাহিত হয়েছে, এরপরই বিকট এক শব্দ। ফ্লাইট ১২৮০-এর ১৪৪ যাত্রী ও ৫ ক্রুর জন্য নেমে এল দুঃস্বপ্ন।
বিন্দুমাত্র কোনো ইঙ্গিত না দিয়েই হঠাৎ বিমানের একটি ফ্যান ব্লেড ভেঙে যাওয়ার পর বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় বিমানের বাম দিকের ইঞ্জিনটি। সঙ্গে সঙ্গেই নেমে এল অক্সিজেন মাস্ক। মুহূর্তের মধ্যে কয়েক হাজার ফুট নিচে নেমে গেল বিমানটি।
পরের ২০ মিনিট ছিল বিমানের যাত্রীদের জন্য জীবনকালের সবচেয়ে ভয়াবহ আতঙ্ক ২০ মিনিট। পাইলট ততক্ষণে বিমানের যা্ত্রাপথ বদল করে ফেলেছেন। ফিলাডেলফিয়াতে জরুরি অবতরণ করতে হবে তাকে। বিমান এবার ছুটছে ফিলাডেলফিয়ার দিকে। যাত্রীদের হাতে প্রার্থনা করে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপাায় নেই।
অন্যদিকে ককপিটে এক ইঞ্জিনে বিমান চালিয়ে যাত্রীদের বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করে যাচ্ছেন পাইলট।
পাইলট ট্যামি জো শাল্টস এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে জানতেন। নারীদের জন্য যখন নেভির বিমান চালানোর পথ খোলেনি, তখন সুপারসনিক এফ/এ-১৮ হর্নেটস উড়িয়েছেন তিনি।
এদিকে বিমানের জানালা ভেঙে ততক্ষণে আহত হয়েছেন যাত্রীরা। এমন অবস্থায় শাল্টস ফিলাডেলফিয়া বিমানবন্দরে যোগাযোগ করে জানান তিনি জরুরি অবতরণ করতে চান। তিনি জানিয়ে দেন তার বিমানে আহত যাত্রী রয়েছে, অবতরণের পর তাদের জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হবে।
এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার থেকে শাল্টসের কাছে জানতে চাওয়া হয় বিমানটিতে আগুন ধরেছে কি না। শাল্টস জানান, না আগুন ধরেনি, কিন্তু বিমানের কিছু অংশ খুলে চলে গেছে।
শেষ পর্যন্ত ২০ মিনিটের বিভীষিকার পর ভালোভাবে অবতরণ করে বিমানটি। বেঁচে যান বিমানের যাত্রীরা বড় কোনো দুর্ঘটনার হাত থেকে।
বিমানটি শেষ পর্যন্ত বড় বিপদে থেকে রক্ষা পেলেও চাপ সহ্য করতে পারেননি ৪৩ বছর বয়সী রিয়োর্দান নামে এক যাত্রী। বিমানটি অবতরণের পর তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। তবে শারিরীক কোনো আঘাতে তার মৃত্যু হয়নি।