এই প্রথম আরবের মাটিতে পা পড়ল কোনও পোপের। গতকাল দু’দিনের সফরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি পৌঁছেই যুদ্ধ শেষের বার্তা দিলেন পোপ ফ্রান্সিস। আবু ধাবির প্রেসিডেন্সিয়াল বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহির যুবরাজ শেখ মহম্মদ বিন জায়েদ এবং কায়রোর আল আজহারের গ্র্যান্ড ইমাম শেখ আহমেদ আল-তায়েব। তাঁদের আমন্ত্রণেই খ্রিস্টান ও মুসলিম ধর্ম নিয়ে এক দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যোগ দিতে আরবে এসেছেন পোপ।
ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সে দেশের সরকারের পক্ষে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়ছে আমিরশাহিও। গত চার বছরে অন্তত দশ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। অন্য দিকে, কাতারের সঙ্গেও কূটনৈতিক সংঘাত চলছে আমিরশাহির। আবু ধাবিতে পা দিয়েই যুদ্ধ-পরিস্থিতি নিয়ে সরব হন পোপ। আর্জি জানান, ইয়েমেনে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা গৃহযুদ্ধের এ বার অন্তত অবসান ঘটুক। তার জন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকে এগিয়ে আসতে বলেছেন তিনি। বলেন, ‘‘এই দীর্ঘ সংঘর্ষে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে মানুষ। সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিশুরা। ইয়েমেনের খাদ্যসঙ্কট চরমে পৌঁছেছে।’’
একটি খ্রিস্টান ধর্মসভাতেও যোগ দেবেন পোপ ফ্রান্সিস। আগামীকাল জ়ায়েদ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামের ওই সম্মেলনে আনুমানিক ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ক্যাথলিক ভিড় করতে পারেন বলে মনে করছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রায় দশ লক্ষ ক্যাথলিকের বাস সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। ধর্মসভার টিকিট জোগাড় করতে গতকাল সকালে বৃষ্টি মাথায় করেই আবু ধাবির সেন্ট জোসেফ ক্যাথিড্রালে জড়ো হন ভক্তেরা।
ধর্ম-সম্মেলন নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো। বলেন, ‘‘ধর্মীয় স্বাধীনতার ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’’ আবু ধাবি ঘুরতে আসা এক মার্কিন তরুণী জানালেন, পোপের এই আরব সফর সহিষ্ণুতার পথ দেখাবে। খুলে দেবে আলোচনার দরজা। গোয়া থেকে আবু ধাবিতে চলে এসেছেন ভারতীয় নাগরিক ডরিস ডিসুজা। বললেন, ‘‘পোপ আসছেন জেনেই আবু ধাবি চলে এসেছি। পোপকে সামনে থেকে দেখার এই সুযোগ হারানো যাবে না।’’
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিদেশ মন্ত্রী আনোয়ার গারগাশ বলেন, ‘‘মানবতার গভীর মূল্যবোধ বয়ে এনেছে পোপের এই সফর। বন্ধুত্ব ও সহিষ্ণুতার নজির গড়ল আমাদের দেশও।’’