বিক্ষোভের মুখে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটল ভবন। এক পর্যায়ে অবরুদ্ধ করা হয় পার্লামেন্ট ভবনটি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের বিক্ষোভ ঠেকাতে ফাঁকা গুলি এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে দেশটির পুলিশ।  এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন চারজন।

ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশের বরাত দিয়ে সর্বশেষ এতথ্য জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

বিবিসি জানিয়ে, যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে; তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন গুলিতে। তিনি একজন নারী। তার নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। অন্যরা কিভাবে মারা গেছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সূত্র বলছে, হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাদের।

স্থানীয় সময় বুধবার ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল ভবনে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ডেমোক্রাট প্রার্থী জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতির আনুষ্ঠানিকতা চলছিল। এরই এক পর্যায়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

সিএনএন ও বিবিসি জানায়, ক্যাপিটল ভবনের চারপাশে জড়ো হন কয়েক হাজার ট্রাম্প সমর্থক। তাদের মধ্যে ছিল মারমুখী ভাব। প্রথমে তারা ওই ভবনে ঢোকার চেষ্টা চালান। এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি চালায় এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। ক্যাপিটল ভবন থেকে ট্রাম্প-সমর্থকদের হটিয়ে দিতে পুলিশকে অন্তত তিন ঘণ্টা ধরে চেষ্টা চালাতে হয়। পুলিশ ভবনটি অবরুদ্ধ করে রাখে।

ক্যাপিটল ভবনে সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটান পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিভিন্ন ধরনের অন্তত পাঁচটি বন্দুক জব্দ করেছে। আহত কয়েকজন পুলিশ অফিসারকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এ ঘটনার পর যৌথ অধিবেশন স্থগিত হয়ে যায়। তবে রাতে আবার তা শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটনে কারফিউ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। ট্রাম্প একটি ভিডিও বার্তায় তার সমর্থকদের বাড়ি ফিরে যেতে অনুরোধ করেছেন।

এ ঘটনায় বিস্মিত ও স্তব্ধ হওয়ার প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন বিশ্বের রাজনৈতিক নেতারা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক দৃশ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, ‘ট্রাম্প এবং তার সমর্থকদের উচিত শেষ পর্যন্ত আমেরিকার ভোটারদের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া এবং গণতন্ত্রের পদদলন না করা।’

এক বিবৃতিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেছেন, এটা পুরোপুরি অসুস্থ এবং হৃদয়বিদারক দৃশ্য। রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল কোন দেশে এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে নির্বাচনের ফলকে বিতর্কিত করা হয়- আমাদের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে এর কোনো স্থান নেই।