গতকাল রাতে বাংলার কোটি ক্রিকেট ভক্তরা স্নায়ুচাপে ভুগছিলেন। স্নায়ুক্ষয়ের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করে গেছে । ম্যাচের ফলাফল কি হবে ! একবার বাংলাদেশের দিকে তো আরেকবার শ্রীলঙ্কার দিকে ঝুলে যাচ্ছে ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত মাহমুদুল্লাহর কাঁধে ভর করে অবিশ্বাস্য জয় পায় টাইগাররা। শেষের দুই বলে যখন ৬ রান প্রয়োজন তখন এক বল হাতে রেখে ছক্কা মেরেই বাংলাদেশকে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে তুলে দিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার ১৮ বলে অপরাজিত ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংসই রবিবার ভারতের সাথে ফাইনালে খেলার টিকিট পাইয়ে দেয়।
গতরাতের ম্যাচের উত্তেজনা মাঠের দর্শক থেকে খেলোয়াড় এমনকি আম্পায়ারদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। শেষ ওভারে যখন বাংলাদেশের প্রয়োজন ১২ রান। তখন শ্রীলঙ্কার বোলারের প্রথম বল ডট যা স্ট্রাইকে থাকা মুস্তাফিজের কাঁধের ওপর দিয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয় বলও কাঁধের ওপর দিয়ে গেলে আম্পায়ার নো বল ডাকলেন না। উল্টো রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে গেলেন মোস্তাফিজ। এতেই বাঁধে বিপত্তি। শ্রীলঙ্কান ফিল্ডারদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় লেগে যান মাহমুদউল্লাহর। কী কারণে যেন আম্পায়াররাও মাহমুদউল্লাহর ওপর ক্ষিপ্ত। বোঝা যাচ্ছিল না, কেন এমন অবস্থা। একবার মনে হচ্ছিল, মাহমুদউল্লাহকে স্ট্রাইক দেবেন না আম্পায়ার। আবার মনে হচ্ছিল, পরপর দুটি কাঁধের ওপর ডেলিভারির কারণে নো দেয়া নিয়ে বিতর্ক হতে পারে।
অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে দেখা গেলো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর রুবেল হোসেনকে উঠে আসতে বলছেন। আম্পায়ার আর ম্যাচ রেফারিসহ অন্য কর্মকর্তারা থামানোর চেষ্টা করছেন তাকে। ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে মাঠেই থাকতে বললেন। অবশেষে বিরোধ থামলো। স্ট্রাইকে থাকলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদই।
নাটকীয়তার চরম পর্যায়ে তখন। শেষ চার বলে প্রয়োজন ১২ রান। তৃতীয় বলেই মাহমুদউল্লাহ মারলেন বাউন্ডারি। চতুর্থ বলে নিলেন দুই রান। শেষ দুই বলে প্রয়োজন আর ৬ রান। ঠিক তখনই ঠাণ্ডা মাথায় শ্রীলঙ্কার ২৩ হাজার দর্শককে কাঁদিয়ে দারুণ এক ফ্লিক করে বল পাঠিয়ে দিলেন গ্যালারিতে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছক্কা মেরেই বাংলাদেশকে ২ উইকেটের ব্যবধানে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ।
ভারতের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার ৭০তম জাতীয় দিবসের টুর্নামেন্ট নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে উঠে গেলো বাংলাদেশ। ১৮ মার্চ এই প্রেমাদাসাতেই রোহিত শর্মাদের বিপক্ষে ট্রফির লড়াইয়ে মাঠে নামবে টাইগাররা।