বিছানার উপর উপুড় হয়ে শুয়ে হাসি-খুশি তহুরা, লাফালাফি করছে। আর মায়ের কোলে শুয়েই মুখে খুশির ঝিলিক তোফার। অথচ দেখে বোঝার উপায় নেই, এই শিশু দুটি ক’দিন আগে ছিল জোড়া লাগানো। মৃত্যু ঝুঁকি উঁকি দিচ্ছিল শিশু দু’টির দিকে। অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার আগে চিকিত্সকরা বারবার মায়ের কাছে জিজ্ঞেস করেছেন তারা অপারেশন করবেন কি-না? মনকে কঠোর করে অনুমতি দিয়েছেন মা সাহিদা বেগম। চিকিত্সকদের সর্বাত্মক চেষ্টা আর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় আজ নতুন করে বাঁচতে শিখছে তোফা আর তহুরা। তাই আজ চিকিত্সক আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই সাহিদার। মুখে কিছুই বলতে পারেন না, শুধুই কাঁদেন।
গত ১৬ জুলাই হাসপাতালে শিশু দু’টি ভর্তির পর অপারেশন হয় ১ আগষ্ট। জন্মের পর থেকে ১০ মাস তোফা ও তহুরা একসঙ্গে বড় হয়েছে। পিঠের কাছ থেকে কোমরের নিচ পর্যন্ত তারা পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। জন্মেও পর দুজনের পায়খানার রাস্তা ছিল না। জন্মেও ৮ দিনের মাথায় এই হাসপাতালের একই বিভাগে অপারেশনের মাধ্যমে তাদের পায়খানার রাস্তা তৈরি করা হয়। তবে মাথা-হাত-পা ছিল আলাদা।
শিশু সার্জারি বিভাগের চিকিত্সকেরা জানান, বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘পাইগোপেগাস’ শিশু আলাদা করার ঘটনা এটি প্রথম। এর আগে অন্যান্য হাসপাতালে তিন জোড়া শিশুকে অস্ত্রোপচার করে আলাদা করা হয়েছে, তাদের ধরন ছিল আলাদা। তোফা-তহুরার মায়ের নাম শাহিদা ও বাবার নাম রাজু মিয়া। তাদের বাড়ি গাইবান্ধায়। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর শাহিদা তোফা-তহুরার জন্ম দেন। তাদের বাবা দিনমজুর।