যুক্তরাষ্ট্রে রান্না বিষয়ক ‘মাস্টার শেফ জুনিয়র’ প্রতিযোগিতায় সেরা ২০ জনের মধ্যে অষ্টম হয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আফনান আহমেদ।
২০ এপ্রিল ছিল আফনানের শেষ দিন। অর্থাৎ অষ্টম সেরা প্রতিযোগীর খেতাব নিয়ে তাকে বিদায় নিতে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৫ হাজার শিশু-কিশোর ( ৯ বছর থেকে ১৩ বছর) অংশগ্রহণ করে এই ‘মাস্টার শেফ জুনিয়র’ প্রতিযোগিতায়।
প্রতিযোগিতায় আফনান সর্বশেষ রান্না করেছিল জাপানী খাদ্য। এর আগে তান্দুরি গ্রিল ফিশ, গাজর আর শশা মিশিয়ে চাটনি তৈরি করেছিল। আফনানের সিগন্যাচার রান্না হচ্ছে, ‘সার্ফ অ্যান্ড টার্ফ উইথ অ্যাসপেরাগাস অ্যান্ড ম্যাশড পটেটো’।
ছবি কৃতজ্ঞতা: গ্রে গায়েনে-ফক্স
আফনান আহমেদ বলে, “বাংলাদেশের অনেক কিছুই আমেরিকানরা ব্যবহার করছে, অথচ অনেকেই বাংলাদেশের ব্যাপারে কোন ধারণা রাখে না। এমন অবস্থায় পরিবর্তন আনতে আমার এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণটি ছিল অন্যতম একটি উদ্যোগ। যখনই সুযোগ হয়েছে, তখনই বাংলাদেশের কথা বলেছি প্রতিটি পর্বে।”
আফনান বলে, “টিভিতে রান্না-বান্না দেখেই আমি উদ্বুদ্ধ হয়েছি। তবে মা’র সহায়তা আমাকে পরিপূর্ণতা এনে দেয়। এ সাহসেই আমি এমন একটি বড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলাম। চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। এতে আমার কোন দুঃখ নেই। যতটা এগিয়েছি, তা আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করবে।”
চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ থেকে শামীমা আহমেদ গত ২৫ বছর যাবত আটলান্টায় বাস করছেন একমাত্র সন্তান আফনানকে নিয়ে।
আফনান আরও বলে, “আমি বাঙালি হিসেবেই বড় হতে চাই। বাংলাদেশের সংস্কৃতি আমাকে মুগ্ধ করে। কেন এমন হয়-তাও আমার সহপাঠিদের জানিয়েছি। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী অন্যদের সাথেও এ নিয়ে কথা হয়েছে।”
ছবি কৃতজ্ঞতা: গ্রে গায়েনে-ফক্স
যুক্তরাজ্যে টিভি সিরিয়ালের জনপ্রিয় ‘জুনিয়র মাস্টার শেফ’-এর অনুকরণে ২০১৩ সাল থেকে আমেরিকায় চালু হয়েছে এই প্রতিযোগিতা। এবার ফেব্রুয়ারিতে এর পঞ্চম আসর বসে। এটি মার্কিন টিভি চ্যানেল ‘ফক্স’-এ দেখানো হয়।
এ প্রতিযোগিতার হোস্ট ‘ট্রিপল সেভেন’-এর জনসংযোগ কর্মকর্তা কেইস ম্যাকজিহি বলেন, “আফনানের অংশগ্রহণের ঘটনাটি অনেকেরই দৃষ্টি কেড়েছে। আমরাও তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করবো।”
এ প্রতিযোগিতা চলাকালে সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাও একদিন এসে আফনানের রান্না খেয়েছেন। প্রতিযোগিতায় বিচারকদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা শেফ গর্ডন রামসে, ক্রিস্টিনা টসি, গ্রাহাম ইলিয়ট, জো বাস্টিয়ানিচ, এবং অ্যারন স্যাঞ্চেজ।