যৌন হয়রানিকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করার একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সৌদি আরবের মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিসভার মঙ্গলবারের এই সিদ্ধান্তের পর এক রাজকীয় ডিক্রি জারির মাধ্যমে প্রস্তাবটি আইনে পরিণত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে; দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ-র প্রতিবেদনের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
অত্যন্ত রক্ষণশীল সৌদি আরবে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান যেসব সংস্কার শুরু করেছেন, আইনে পরিণত হওয়ার অপেক্ষায় থাকা এই প্রস্তাবটিও তারই ধারাবাহিকতা।
সংস্কারের অংশ হিসেবে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর কয়েক দশক ধরে আরোপ করে রাখা নিষেধাজ্ঞাও আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তুলে নেওয়া হচ্ছে।
আরব বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিকে তেল রপ্তানি নির্ভরতা থেকে সরিয়ে বহুমাত্রিক অর্থনীতিতে পরিণত করতে চাইছেন যুবরাজ মোহাম্মদ। পাশাপাশি কঠোর সামাজিক আইনকানুন শিথীল করে বিনোদনের বিভিন্ন পথ খুলে দিয়ে সৌদিদের ঘেরাটোপে বন্দি জীবনযাত্রায়ও পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন তিনি।
সোমবার দেশটির শুরা কাউন্সিলের উপদেষ্টা পরিষদ যৌন হয়রানি বিরোধী ওই আইন প্রস্তাবটি অনুমোদন করে। এতে যৌন হয়রানির অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও তিন লাখ রিয়াল জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
শুরা কাউন্সিলের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “(প্রস্তাবিত আইনটি) হয়রানির অপরাধের সঙ্গে লড়াই করা, প্রতিরোধ করা, অপরাধকারীদের শাস্তি দেওয়া ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, সম্মান ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা সুরক্ষায় ভুক্তভোগীকে নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষে ইসলামি আইন ও শরিয়া মোতাবেক প্রণীত হয়েছে।”
গত বছর সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল যা আগামী ২৪ জুন থেকে কার্যকর হবে। এই সিদ্ধান্তকে প্রগতিশীলতার পথে সৌদি আরবের যাত্রার প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
কিন্তু চলতি মাসের প্রথমদিকে কর্তৃপক্ষ প্রায় এক ডজন নারী অধিকার আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করে। এসব আন্দোলনকারীরা গাড়ি চালানোর অধিকার ও পুরুষ অভিভাবকত্ব পদ্ধতির অবসান ঘটানোর দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ বন্দি ওই আন্দোলনকারীদের আটকাদেশ ও তাদের বর্তমান অবস্থান সর্ম্পকে তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের আইনী অধিকার নিশ্চিত করতে সৌদি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।