ডিএমপি নিউজ: রাজধানীর রামপুরায় রিকশা চালক শাহ আলম হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির রামপুরা থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো-মোঃ শরীফুল ইসলাম, মোঃ চান মিয়া ওরফে চান্দু, ফুল মিয়া ও মোঃ আল আমিন।
রবিবার (৫ মে ২০২৪) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান বিপিএম, পিপিএম।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ৮ এপ্রিল রাত অনুমান নয়টার দিকে রামপুরার বনশ্রী এ/বি এভিনিউ রোড নং-২ থেকে অটো রিকশাওয়ালা মোঃ শাহ আলম মিয়া (৬০) কে অজ্ঞান করে তার অটো রিকশাটি চুরি করে নিয়ে যায়। শাহ আলমের আত্মীয়-স্বজন তাকে চিকিৎসার জন্য মুগদা মেডিকেলে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহ আলম ১৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। তার ছেলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওইদিন রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মামলার পরপরই রামপুরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকাসহ খিলগাঁও এলাকার শতাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে ও বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে অজ্ঞান পার্টির মূলহোতা মোঃ শরীফুল ইসলামসহ তার সহযোগী মোঃ চান মিয়া ওরফে চান্দু ও শাহাবুদ্দিনকে শনাক্ত করে। পরবর্তী সময়ে গতকাল শনিবার (৪ মে ২০২৪) মুগদা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে শরীফুল ও চান্দুকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ৩২ টি চেতনা নাশক ট্যাবলেট ও একটি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জের সিদ্দিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোরাই রিকশা ক্রেতা ফুল মিয়া ও মোঃ আল আমিন নামের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। তখন তাদের হেফাজত থেকে ৭টি চোরাই অটো রিকশা উদ্ধার করা হয়।
এ চক্রের চুরির কৌশল সম্পর্কে উপ-পুলিশ কমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, এ চক্রের প্রধান মোঃ শরীফুল ইসলাম ইতোপূর্বে কাভার্ডভ্যান চালাতো। সে কাজটি চলে গেলে নড়াইলের এক গুরুর মাধ্যমে অটোরিকশা চুরির কৌশল রপ্ত করে। পরবর্তী সময়ে সে চান্দু ও সাহাবুদ্দিনকে সাথে নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অটো রিকশা চুরি শুরু করে। এরা তিনজনে একটি রিকশা নিয়ে বের হয়ে টার্গেট খুঁজতে থাকে। বাজারে ভালো দাম পাওয়া যাবে এমন একটি খালি রিকশা আপ-ডাউনের জন্য ভাড়া করে। এই আপ-ডাউনের মধ্যে পথে কোথাও থামিয়ে নিজে চা খায় ও রিকশাওয়ালাকে খাওয়ার জন্য অফার করে। রিকশাওয়ালা ইচ্ছেপোষণ করলে কৌশলে তার চায়ের সাথে চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে দেয়। পরবর্তী সময়ে রিকশাওয়ালাকে কোথাও ফেলে রেখে রিকশাটি বিক্রি করে দেয়। তারা প্রতি সপ্তাহে এভাবে ২/৩টি অটোরিকশা চুরি করে থাকে। গত ৯ মাসে তারা এভাবে শতাধিক অটোরিকশা চুরি করেছে বলে স্বীকার করেছে।
রিকশা চালনাকালে কোন যাত্রী চা বা অন্যকিছু খাওয়ার অফার করলে তা না খাওয়ার অনুরোধসহ এমনভাবে অজ্ঞান হওয়ার ঘটনা কোন রিকশাচালকের সাথে ঘটলে নির্ভয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় জানানোর অনুরোধ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।