শরণার্থীদের জন্য আগামী ছয় মাসে সংস্থাটির ২০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ প্রয়োজন। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক রবার্ট ওয়াটকিন্স এ কথা বলেছেন। রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে সরকারের জায়গা বরাদ্দের সিদ্ধান্তকে তিনি ‘বড় অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছেন। শরণার্থী নিবন্ধনে সরকারকে সহযোগিতারও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। খবর এএফপি।
গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল নামে। নতুন আসা শরণার্থীদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার তহবিল চেয়ে ৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে দাতাদের কাছে আবেদন জানানো হয়। কিন্তু এক মাসেরও কম সময়ে আনুমানিক ৪ লাখ ৩০ হাজার শরণার্থী এসে পৌঁছায় সংকট মোকাবেলায় প্রার্থিত অংকের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ লাগবে বলে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক রবার্ট ওয়াটকিন্স গতকাল শুক্রবার জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক বলেছেন, এ পর্যায়ে আমরা ২০ কোটি ডলার প্রয়োজন মনে করছি। আমরা বর্তমানে একটি পরিকল্পনা করছি। চার-পাঁচদিনের মধ্যে এটা চূড়ান্ত হবে। শরণার্থীদের খাবার, ওষুধ ও পানীয় জল জোগাতে সাহায্য সংস্থাগুলো এরই মধ্যে হিমশিম খাচ্ছে। অনেক শরণার্থী দৈনিক বড়জোর একবেলা খেতে পারছে।
শরণার্থী শিবিরগুলোয় ‘জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ের উপক্রম হয়েছে’ বলে সাহায্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) সতর্কতা বার্তা জানিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ভিড়ে উপচে পড়া শিবিরগুলোর ভেতরে নোংরা পানি ও মলমূত্র বইছে বলে এমএসএফ উল্লেখ করেছে।
রবার্ট ওয়াটকিন্স বলেন, ৪ লাখ ৩০ হাজার শরণার্থীর উপস্থিতি সত্যিকার অর্থে একটি বিপর্যয়কর ঘটনা— এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলায় যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। সবার কাছে সাহায্য পৌঁছাতে আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করছি, যাতে করে সবাই মাথা গোঁজার ঠাঁই পায়; খাদ্য, চিকিত্সা, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও পয়োনিষ্কাশনের সুবিধা পায়।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক নতুন ও সুপরিসর শরণার্থী শিবিরের জন্য সরকারের জায়গা বরাদ্দের সিদ্ধান্তকে ‘বড় অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেন। পুরনো দুটি শরণার্থী শিবিরের মাঝে প্রায় দুই হাজার একর জমিতে এরই মধ্যে নতুন আশ্রয় নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
রবার্ট ওয়াটকিন্স বলেন, শরণার্থীরা যাতে নিজেরাই নিজেদের জন্য স্বল্পকালীন আশ্রয় নির্মাণ করতে পারেন, সেজন্য গৃহ নির্মাণ উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। মধ্যমেয়াদে তারা আরো টেকসই কোনো কাঠামো নির্মাণ করতে পারবেন।
রবার্ট ওয়াটকিন্স শরণার্থী নিবন্ধনে জাতিসংঘের সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার এ কাজটি শুরু করেছে। আমরা সরকারকে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন প্রযুক্তি ও জনবল দিয়ে সহযোগিতার প্রস্তাব করেছি। এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে এখনো আলোচনা চলছে।
শরণার্থীদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে আরো খাদ্য, পানীয়, ওষুধ ও তাঁবু দরকার বলে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী হেলি থরনিং-শ্মিড জাতিসংঘে এক বক্তৃতায় বলেছেন।