রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আজ শিশু শ্রম বন্ধে এবং তাদের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর লক্ষ্যে শিশু বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য অভিভাবক, নিয়োগকারী সংস্থা, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, শ্রম সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রচলিত বা অপ্রচলিত এবং কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে প্রতিটি শিশুকে একজন আদর্শ জনসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা আবশ্যক’। বিশ্ব শিশু শ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আজ রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি শিশু শ্রম বন্ধে সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা বা নীতিমালা এবং পাশাপাশি সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর রাষ্ট্রপতি গুরুত্বারোপ করেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) যৌথভাবে এ আলোচনার সভা আয়োজন করে। এর বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সংকট, দুর্যোগ যাই হোক, শিশু শ্রম বন্ধ হোক’।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘আর্থ-সামাজিক কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল বিশ্ব থেকে এখনও শিশু শ্রম দূর হয়নি এবং বাসাবাড়িতে, কৃষিক্ষেত্রে, কলকারখানায়, পরিবহন খাতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কর্মক্ষেত্রে এখনও শিশু শ্রম দেখা যায়।’ রাষ্ট্রপতি দেশ থেকে শিশু শ্রমের অবসান ঘটাতে এবং শিশু বান্ধব সমাজ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুষ্ঠু সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, শিশু শ্রম বন্ধ করার লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে জাতীয় শিশু শ্রম নিরসন নীতি ২০১০ প্রণয়ন করেছে, পাশাপাশি শিশুদেরকে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে ২০০৩ সাল থেকে পরবর্তী ১০ বছরের শিশু শ্রম প্রায় ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
তিনি বলেন, শিশুরা যে কোন দুর্যোগে সহজ শিকারে পরিণত হয় এবং শিশু পাচার ও সহিংসতা, বৈষম্য বা অবিচার তাদের বিকাশের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বে বর্তমানে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন শিশু সংঘাত ও সহিসংতার শিকার। পাশাপাশি প্রায় ২শ’ মিলিয়ন মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গৃহহীন হয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে, যা তাদেরকে বাস্তুচ্যুত করেছে।
‘গৃহহীন শিশুরা পাচার বা ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রমের শিকার হচ্ছে। অনেকেই ভিক্ষা শুরু করে। বিশ্বের বিভিন্ন অংশে লাখ লাখ শিশু ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে’ উল্লেখ করে তিনি শিশুদের রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে মধ্যে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইন মন্ত্রী আনিসুল হক, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার আমীরুল ইসলাম, বাংলাদেশে আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিবাস রেড্ডি প্রমুখ।