দেশের টেলিভিশন ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও দীর্ঘস্থায়ী অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’। যুগ যুগ ধরে দর্শকদের মনের কোণে জায়গা দখল করে থাকা এই অনুষ্ঠানের প্রাণভোমরা হানিফ সংকেত। তার সুবাদেই অনুষ্ঠানটি এত জনপ্রিয় ও দর্শকনন্দিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি বিনোদনের পাশাপাশি সচেতনতা, সামাজিক শিক্ষার বিস্তার যেমন প্রসারিত করেছেন, তেমনি সমাজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরেছেন।
শুধু ইত্যাদি দিয়েই নয়, নাটক-টেলিফিল্ম নির্মাণ করে এবং বই লিখেও দেশের শিল্প-সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদান রেখেছেন তিনি। জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেতের ৬৫তম জন্মদিন আজ। ১৯৫৮ সালের ২৩ অক্টোবর বরিশালের বসুরহাটে জন্মগ্রহণ করেন হানিফ সংকেত। তিনি একাধারে পরিচালক, উপস্থাপক, লেখক ও প্রযোজক। তার পরিচালিত ও উপস্থাপিত বিটিভির বিনোদন ও সামাজিক সচেতনতামূলক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ এখনও জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
প্রয়াত ফজলে লোহানীর ‘যদি কিছু মনে না করেন’ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান দিয়ে তার পথচলা শুরু। এরপর দেশের সবচেয়ে জনিপ্রয় ম্যাগাজিন ইত্যাদি দিয়ে তিনি রাজত্ব করে চলেছেন। সমাজের নানা অসঙ্গতিকে মজার ছলে ইত্যাদিতে তুলে ধরেন হানিফ সংকেত। বিবিসির জরিপ বলছে, বিশ্বের ৭৫ শতাংশ বাঙালি ‘ইত্যাদি’ দেখেন।
নিজের কাজের বিষয়ে খুবই যত্নশীল হানিফ সংকেত। নাটক পরিচালনাতেও নিজের মুন্সিয়ানা বজায় রেখেছেন। তার পরিচালিত জনপ্রিয় নাটকের মধ্যে ‘আয় ফিরে তোর প্রাণের বারান্দায়’, ‘দুর্ঘটনা’, ‘তোষামোদে খোশ আমোদে’, ‘কিংকর্তব্য’, ‘কুসুম কুসুম ভালোবাসা’, ‘শেষে এসে অবশেষে’ উল্লেখযোগ্য।
চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন হানিফ সংকেত। বেশ কয়েকটি ব্যঙ্গ ও রম্য রচনা লিখেছেন তিনি। ‘চৌচাপটে’, ‘এপিঠ ওপিঠ’, ‘ধন্যবাদ’, ‘অকাণ্ড কাণ্ড’, ‘খবরে প্রকাশ’, ‘ফুলের মতো পবিত্র ’, ‘প্রতি ও ইতি’, ‘আটখানার পাটখানা’ অন্যতম।
সামাজিক কার্যক্রমের জন্য ২০১০ সালে একুশে পদক পুরস্কার পান হানিফ সংকেত। এছাড়া পরিবেশ শিক্ষা ও প্রচারের জন্য ২০১৪ সালের জাতীয় পরিবেশ পদক দেয়া হয় তাকে। সেই সাথে দেশে-বিদেশে বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন হানিফ সংকেত। তথ্য সূত্র: অনলাইন।