নাটকীয় প্লট পরিবর্তন। এই জন্যই তো ক্রিকেট এত জনপ্রিয়। টি-২০ সিরিজে হোয়াইট ওয়াশ হওয়ার পর অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়াল নিউ জিল্যান্ড। অকল্যান্ডে দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিল কিউয়িরা। দরকারের সময় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ভারতীয় ব্যাটিং লাইন। একমাত্র শ্রেয়স আইয়ার ছাড়া কোনও ভারতীয় ব্য়াটসম্য়ান রান করতে পারলেন না। তবে শেষরক্ষা হল না।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ২২ রানে হেরে সিরিজ খোয়াল ভারত। ইডেন পার্কে ২৭৪ রান তাড়া করতে নেমে ২৫১ রানে শেষ হল ভারতের ইনিংস।
বোলারদের বদান্যতায় এদিন ইডেন পার্কে নিউজিল্যান্ডকে ৩০০-র মধ্যে আটকে রাখেন ভারতীয় বোলাররা। কিন্তু প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ২৭৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা মহার্ঘ্য হয়ে দেখা দেয় ভারতীয় শিবিরে। কিউয়ি পেসারদের দাপুটে বোলিং রান তাড়া করতে নেমে কাঁপুনি ধরিয়ে দেয় ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপে। স্কোরবোর্ডে ১০০ রান ওঠার আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ময়াঙ্ক আগরওয়াল, পৃথ্বী শ, বিরাট কোহলি, কেএল রাহুল ও কেদার যাদব।
প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং হারাকিরির মাঝে একা কুম্ভে লড়াই করেন শ্রেয়স আইয়ার। অর্ধশতরান পূর্ণ করে ব্যক্তিগত ৫২ রানে বেনেটের শিকার হন দিল্লি ব্যাটসম্যান। দলের রান তখন ২৭.৩ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৯। লম্বা হয়নি শার্দুল ঠাকুরের ইনিংস। ১৫ বলে ১৮ রানে ফেরেন তিনি। এরপর ভাবা গিয়েছিল দ্বিতীয় ম্যাচে সহজেই কিউয়িদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে চলেছে ভারতীয় দল।
কিন্তু অষ্টম উইকেটে টেল-এন্ডার নভদীপ সাইনিকে নিয়ে বাউন্স-ব্যাক করেন রবীন্দ্র জাদেজা। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের স্মৃতি উসকে দিয়ে ম্যাচে নতুনভাবে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন বাঁ-হাতি অল-রাউন্ডার। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করে ম্যাচ ৫০-৫০ অবস্থায় নিয়ে আসে জাদেজা-সাইনি জুটি। কিন্তু মোক্ষম সময় হঠাতই ছন্দপতন। অর্ধশতরান থেকে ৫ রান দূরে দাঁড়িয়ে অহেতুক তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আউট হন সাইনি। দলের প্রয়োজন তখন ৩৩ বলে ৪৫।
অষ্টম উইকেটে দু’জনের মূল্যবান ৭৬ রানের পার্টনারশিপে জয়ের সঞ্চার করে ভারতীয় শিবিরে। সাইনি আউট হওয়ার পরেও আশা ছিল জাদেজাকে নিয়ে। মনে করা হয়েছিল যুবেন্দ্র-বুমরাহকে নিয়ে বৈতরণী পার করে দিতে পারেন তিনি। কিন্তু রানিং বিট্যুইন দ্য উইকেট ভুল বোঝাবুঝিতে চাহাল রান আউট হয়ে ফেরেন চাহাল। এরপর ৪৮.৩ ওভারে চাপের মুখে নতিস্বীকার করেন জাদেজা। ব্যক্তিগত ৫৫ রানে জাদেজা আউট হতেই যবনিকা পতন হয় ভারতীয় শিবিরে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ হেরেও বাকি দু’টি জিতে ঘরের মাঠে সিরিজ ছিনিয়ে নিয়েছিল ভারত। মনে করা হয়েছিল কিউয়ির দেশে হয়তো সেভাবেই কামব্যাক করবেন কোহলিরা। কিন্ত প্রত্যাশা আর বাস্তবের মধ্যে যে যোজন ফারাক, সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটাররা। আর ম্যাচ হারের কারণ খুঁজতে বসলে হয়তো উঠে আসবে অনেক কারণই। তবে এমন চাপের ম্যাচে ওপেনিংয়ে রোহিত শর্মা কিংবা শিখর ধাওয়ানের মতো সিনিয়রদের অভিজ্ঞতার অভাব অনুভূত হল প্রতিপদে।