ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল শ্রীলঙ্কা। রবিবার দুপুর ৩টে পর্যন্ত আটটি বিস্ফোরণ ঘটেছে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো-সহ সংলগ্ন এলাকায়। রবিবার সকালে রাজধানী কলম্বোর কয়েকটি তিনটি হোটেল ও তিনটি গির্জা ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৮৫ জনের নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। আহত হয়েছেন তিনশোরও বেশি। হামলার পর দেশ জুড়ে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্ফু জারি করা হয়েছে।
কেউ এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। গির্জায় ইস্টারের প্রার্থনা চলাকালীন এই হামলা ঘটে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ন’জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন।
সকালের ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পর আরও একটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে দুপুরে। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে জানা গিয়েছে এমনটাই। কলম্বোর চিড়িয়াখানার কাছে সপ্তম বিস্ফোরণটি ঘটে। এর পরে ফের শ্রীলঙ্কার ওরুগোদাওত্তায় অষ্টম বিস্ফোরণের খবর আসে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত দুই ব্যক্তি। এটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ বলে মনে করছে শ্রীলঙ্কার পুলিশ।
কলম্বো হামলায় সেনা ডাকল শ্রীলঙ্কা প্রশাসন। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি মৈত্রীপালা সিরিসেনাও ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে দেশের মানুষের পাশে থাকার কথা জানালেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে। একটি টুইট করে তিনি বলেন, এ জাতীয় হামলা একেবারেই কাপুরুষোচিত। দেশের প্রতিটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে ও দৃঢ় মনের পরিচয় দিতে অনুরোধ জানান তিনি।
রবিবার সকাল পৌনে নটা নাগাদ ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে রাজধানী কলম্বো। ইস্টারের প্রার্থনার সময় তিনটি গির্জায় বিস্ফোরণ ঘটে। একই সঙ্গে তিনটি হোটেলেও পর পর বিস্ফোরণ ঘটে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ঘিরে ফেলে এলাকা। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘৮০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে গুরুতর জখম অবস্থায়, আহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।’’
ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে কলম্বো পুলিশ।
কলম্বোর কোচ্চিকাড়ের অ্যান্টলি গির্জা, নেগোম্বো, বাত্তিকালোয়া, কাতুয়াপিতিয়ার সেন্ট সিবেস্টিয়ান গির্জা-সহ একাধিক জায়গায় বিস্ফোরণের ভয়াবহ শব্দ শোনা গিয়েছে। সাঙরিলা, দ্য কিংসবারি, সিনামন গ্র্যান্ডের মতো বিলাসবহুল হোটেলেও চলে হামলা।
ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণের বিভিন্ন ছবি উঠে এসেছে টুইটার এবং সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। তবে কোন জঙ্গি গোষ্ঠী এই বিস্ফোরণের পিছনে রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়৷
শ্রীলঙ্কা মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদেরই দেশ। দেশে খ্রিস্টধর্মে বিশ্বাসী ক্যাথলিকদের সংখ্যা ছয় শতাংশ মাত্র। ইস্টারের প্রার্থনার কারণেই গির্জায় বেশ ভিড়ই ছিল, তাই এই নির্দিষ্ট সময়টাকেই জঙ্গিরা বেছে নিয়েছে বলে মত শ্রীলঙ্কা পুলিশের।
যেকোনো ব্যাপারে +94712406313 নম্বরে যোগযোগ করার জন্য সেখানকার বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।