ডিএমপি নিউজ: ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর দিবা শাখার এক সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খঃ মহিদ উদ্দিন বিপিএম-বার (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, একজন অভিভাবক গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন যে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর দিবা শাখার গণিতের এক সিনিয়র শিক্ষক মুরাদ হোসেন তাদের কন্যা সন্তানের শ্লীলতাহানী করেছেন। অভিযোগে জানান, ভিকটিম ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী, বয়স ১৩ বছর। সে ৭ম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় গত বছর মার্চ মাসে শিক্ষকের নিজের বাসায় স্থাপিত কোচিং সেন্টারে প্রথম শ্লীলতাহানীর শিকার হয়। তখন ভয়ে কাইকে জানায় নাই। গত নভেম্বর মাসে আবারও চরমভাবে শ্লীলতাহানীর শিকার হয়।
তিনি বলেন, বিষয়টি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে অবগত করা হয়। চলতি মাসের ৩ তারিখ কলেজের প্রিন্সিপাল অভিভাকদের সাথে একটি সভার আয়োজন করে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সভায় ভিকটিম ও তাদের অভিভাকদের কথা শুনা হয়। সেখানে জানা যায় আরও একাধিক ভিকটিম এই শিক্ষকের কাছে শ্লীলতাহানীর শিকার হয়েছে। পরবর্তীতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত শিক্ষক ভিকটিমদের বাসায় গিয়ে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য অনুরোধ জানায়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, এঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার সামনে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অভিযুক্ত শিক্ষকের সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্দন হয়েছে। ভিকটিমের অভিভাবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় একটি মামলা রুজু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে অভিযুক্ত শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোন, মেমোরি কার্ড ও ১টি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত আলামত পর্যালোচনা করে ভিকটিমসহ অন্যান্য ছাত্রীদের বেশ কিছু অডিও রেকর্ডিং ও কথোপকথনের তথ্য পাওয়া গেছে যা যাচাই-বাছাই অব্যাহত আছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গ্রেফতারকৃত শিক্ষককে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। মামলার ভিকটিম বিজ্ঞ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
তিনি জানান, এই মামলা তদন্ত শেষ করে দোষীকে যথোপযুক্ত বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। শুধু শিক্ষক নয় ভবিষ্যতে যে কোন শ্রেণী পেশার মানুষ এধরণের ঘৃণ্য অপরাধে যেন জড়িত হওয়ার সাহস না দেখায় সে ধরণের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা নারী ও শিশুদের ব্যাপারে অত্যন্ত সংবেদনশীল। অবশ্যই প্রতিটা শিশু সন্তান তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাবে। আর এধরনের অপরাধ যেই করবে তাকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে সকল অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার।