ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর সবুজবাগ থানার দক্ষিণগাঁও বেগুনবাড়ি এলাকায় চালককে খুন করে অটোরিক্সা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ঘাতককে গ্রেফতার করেছে সবুজবাগ থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-মোঃ জাহিদ হাসান অপু (২৫) ও মোঃ সোলায়মান (১৮)। গ্রেফতারকৃতদের হেফাজত হতে অটোরিক্সা, রিক্সার ব্যাটারি, মোবাইল ফোন ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়।
গতকাল ০২ নভেম্বর, ২০১৮ দিবাগত রাতে খিলগাঁও থানধীন তিতাস রোড ও ছোট বটতলা এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ সকাল আনুমানিক সোয়া ছয়টার দিকে সবুজবাগ থানাধীন দক্ষিণগাঁও বেগুনবাড়ি এলাকায় মোঃ রাশেদের লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় সংবাদ দেয়া হয়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে রাশেদের গলাকাটা রক্তাক্ত লাশ সনাক্ত করে। এই ঘটনায় সবুজবাগ থানায় অজ্ঞাতনামা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গত ০১ নভেম্বর,২০১৮ একটি মামলা রুজু হয়।
হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে মামলাটি তদন্ত শুরু করে থানা পুলিশ। তদন্তের এক পর্যায়ে বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে নিহত রাশেদের রিক্সাটি খিলগাও থানাধীন বনশ্রী মেরাদিয়া বেগুনবাড়ি হতে উদ্ধারসহ উক্ত হত্যাকান্ডের মূল খুনি হিসেবে অভিযুক্ত জাহিদ হাসান অপুকে খিলগাও থানাধীন তিতাস রোড় হতে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত জাহিদ হাসান অপুকে জিজ্ঞাসাবাদে তার নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত অপর অভিযুক্ত মোঃ সোলায়মানকে খিওগাঁও থানাধীন ছোট বটতলা হতে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর উভয়ের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলের পার্শ্ব হতে উদ্ধার করা হয় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছোরাটি। সেই সাথে অটোরিক্সার ব্যাটারিটি খিলগাঁও থানাধীন জনৈক ইব্রাহিমের গ্যারেজের মিরাজের নিকট হতে উদ্ধার করা হয়।
তদন্তকালে জানা যায়, অভিযুক্ত জাহিদ ও সোলায়মান পেশাদার ছিনতাইকারী। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে বের হয়ে আসে হত্যাকান্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য, তারা গত ৩০ অক্টোবর’১৮ রাত ১২.০০ টার দিকে নন্দিপাড়া ব্রীজ হতে রাশেদকে ৪০ টাকা রিক্সা ভাড়ায় মানিকদিয়া কাঠের পুলে যাওয়ার জন্য ঠিক করে। রাশেদকে নিয়ে মানিকদিয়া কাঠের পুল যাওয়ার পর সেখানে মাটির ট্রাক এবং লোক সমাগম থাকায় তারা কৌশল করে রিক্সার গতিপথ পরিবর্তন করে। এরপর তারা রাত অনুমান ০১.৩০ হতে ০২.০০ টায় অত্র থানার বেগুনবাড়ি এলাকায় গিয়ে পৌঁছায়। ঘটনাস্থল অনেকটা নির্জন এবং জনমানবহীন দেখে রিক্সা থামিয়ে ভাড়া মিটানোর সময় রাশেদের গলায় ধারালো ছোরা ধরে জাহিদ এবং কি আছে দিতে বলে। রিক্সা চালক রাশেদ তার নিকট থাকা সারাদিনের উপার্জিত ৪৩০ টাকা এবং ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি দিয়ে দেয়। উক্ত টাকা ও মোবাইল ফোন পাওয়ার পর জাহিদ রিক্সাটি রেখে চলে যেতে বলে রাশেদকে। রিক্সাটি দিতে রাজি না হলে তাদের সাথে রাশেদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে রাশেদের গলায় ছোরা চালিয়ে জবাই করে জাহিদ। রাশেদ তখন জাহিদকে ঝাপটিয়ে ধরলে জাহিদ উপর্যুপরি ধারালো ছোরা দিয়ে বুকের নিচে আঘাত করে রাশেদের মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর ছোরাটি পাশের জলাশয়ে ফেলে রিক্সাটি নিয়ে সোলায়মান ও জাহিদ পালিয়ে যায়।