জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনের ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করেছে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ (এনআইডি)। ভুলে ভরা জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে অনুবিভাগের সহকারী পরিচালকদের হাতে। যার ফলে স্থানান্তর, হারানো ও ভুল হওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও সময়ক্ষেপণ কমবে বলে আশা করেছে এনআইডি শাখা।
এর আগে সংশ্লিষ্ট দফতরের উপ-পরিচালক পর্যন্ত এ ক্ষমতা দেয়া ছিল। এর ফলে ঢাকাসহ সারাদেশের উপজেলা-থানা-জেলা নির্বাচন অফিস ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে জমা হওয়া হাজার হাজার ভুল হওয়া পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য আবেদনকারীদের মাসের পর মাস যেখানে অপেক্ষা করতে হতো; এখন সে সময় অর্ধেকে নেমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন) আলিমুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, স্থানান্তর, হারানো ও ভুল হওয়া জাতীয় পরিচয় সংশোধন সংক্রান্ত আবেদন প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন নির্বাচন অফিসে জমা পড়ে। যেসব আবেদন দ্রুত সংশোধনযোগ্য সেগুলোর জনবল সংকটসহ নানা কারণে সময় নিয়ে মুদ্রণ করা হতো। কারণ এনআইডি উইংয়ের উপ-পরিচালের নিচে কোনো কর্মকর্তার মুদ্রণের এখতিয়ার ছিল না।
সম্প্রতি সংশোধিত আইডিগুলোকে দ্রুত আবেদনকারীদের হাতে পৌঁছে দিতে সহকারী পরিচালকদের এ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এনআইডি উইংয়ে এখন সরাসরি সংশোধনের আবেদন নেয়া হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট থানা ও জেলা নির্বাচন অফিসের মাধ্যমে এ কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে। এর ফলে সব নাগরিকের প্রতি সমান সুবিচার করা হচ্ছে।
সূত্রমতে, স্থানান্তর, হারানো পরিচয়পত্রের তুলনায় ভুল সংশোধনের আবেদন অনেক বেশি। তবে, ছোটখাটো ভুলের পরিমাণ কম হলেও বড় রকমের যা সংশোধনে অযোগ্য এমন আবেদনও জমা পড়ছে অসংখ্য। ক্রটিপূর্ণ পরিচয়পত্রগুলো সংশোধনে তদন্তসহ নানা যাচাই-বাছাই হয়ে তারপর মুদ্রণ হয়ে থাকে। এ ধরনের জাতীয় পরিচয়পত্রের ক্ষেত্রে মুদ্রণের এখতিয়ার রাখা হয়নি সহকারী পরিচালকদের। কারণ বয়স সংশোধনের ক্ষেত্রে ১০ বছর থেকে আরো ওপরে কারো পরিচয়পত্র সংশোধন করতে হলে এনআইডির ডিজির অনুমোদন লাগে এবং ৯ বছর পর্যন্ত পরিচালকদের সংশোধনের এখতিয়ার দেয়া হয়েছে। তবে, মারাত্মক ভুল নয় এমন আইডির ক্ষেত্রে উপ-পরিচালকরা ক্ষমতাপ্রাপ্ত। নতুন মৌখিক নির্দেশনায় আইডি সংশোধন এবং মুদ্রণে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে সফটওয়্যারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যার যার ক্ষমতা অনুযায়ী দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। সেই অর্থে জাতীয় পরিচয়পত্রের কর্মরত সহকারী পরিচালকরা শুধু ছোটখাটো ভুলে ভরা পরিচয়পত্র সংশোধন করতে পারবেন।
এনআইডির উপ-পরিচালক রুহুল আমিন মল্লিক বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র মুদ্রণে ক্ষমতার ব্যাপ্তি বাড়িয়ে সহকারী পরিচালকদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এসব কর্মকর্তা শুধু নিজ নাম, পিতা-মাতা কিংবা নামের বানানের শব্দ, দাঁড়ি ও কমা সংশোধন করে পরিচয়পত্র মুদ্রণ করতে পারবেন। বড় ধরনের সংশোধন আগের মতোই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তা করা হবে। এ ছাড়া সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্রগুলো তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর মুদ্রণ (প্রিন্ট) করাতে সময়ক্ষেপণ হতো, এখন এই সিদ্ধান্তের কারণে টাইমফ্রেম কমে আসবে।