ডিএমপি নিউজঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) পূর্ব বিভাগের একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে যাত্রাবাড়ী থানার চাঞ্চল্যকর ইসলামিক নিউজ অনলাইন এর এডিটর সুমন হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারীসহ দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
১৮ মার্চ’১৮ রাতে যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো, মোঃ ফয়সাল আহমেদ ও মোঃ জহিরুল ইসলাম জনি। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ভিকটিম সুমনের ব্যবহৃত কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য যে, গত ০৯ মার্চ’১৮ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উত্তর যাত্রাবাড়ীর ৩১ নং শহীদ ফারুক রোডের একটি ৩য় তলা বিল্ডিং হতে সুমন শিকদার এর হাত-পা বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ পেঁচানো লাশ উদ্ধার করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। এ সংক্রান্তে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়।
এ বিষয়ে আজ বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বিস্তারিত জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোঃ আবদুল বাতেন পিপিএম।
তিনি জানান যে, ভিকটিম সুমনসহ তারা বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সিএনজি গাড়ি থেকে ভুয়া ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভয়-ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করতো। ভিকটিম সুমন ফয়সালকে নিউজ পোর্টাল করে অনেক টাকা আয় করা যাবে মর্মে প্রলোভন দেখায়। এ লোভে পড়ে ফয়সাল তার একটা টিনশেড বাড়ি, মোটরসাইকেল ও ক্যামেরা বিক্রি করে। ভিকটিম কৌশলে ফয়সালের বাড়ি বিক্রি করা টাকা আত্মসাৎ করে। এ কারণে ফয়সাল সুমনের উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং নগদ টাকাসহ ৪/৫ লক্ষ টাকা পাবে বলে দাবি করে। সুমন এই টাকা দিতে বিভিন্নভাবে টালবাহানা করতে থাকে। এই পাওনা টাকা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ফয়সাল ও সুমনের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে উক্ত শত্রুতার জের ধরে ফয়সাল ও জনি পরস্পর যোগসাজশে সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ০৭মার্চ’১৮ বেলা ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে ফয়সাল ও জনি ভিকটিম সুমনের ইসলামিক নিউজ নামীয় অফিস কক্ষে যায়। তারা একত্রে নাস্তা করার পর ফয়সাল ভিকটিম সুমনের কফিতে কৌশলে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে খাওয়ায়। কিছুক্ষণপর সুমন রুমে থাকা সোফাতে ঘুমিয়ে পড়ে। এ সুযোগে ফয়সাল ও জনি রুমের বারান্দায় থাকা দড়ি দিয়ে সুমনের হাত-পা বেঁধে গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য টেবিলের উপর থাকা স্কচটেপ সুমনের নাকে ও মুখে পেঁচিয়ে রাখে এবং মৃতদেহ গোপন করার জন্য খাটের নিচে রেখে দেয়। অতঃপর ধৃতরা সুমনের ব্যবহৃত কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।