ডিএমপি নিউজঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার অপরাধ তদন্ত বিভাগ অনলাইন প্রতারণার অভিযোগে রাজধানী থেকে দুইজন নাইজেরিয়ান নাগরিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতদের নাম, ALBERT IKECHUKWU@EZE ওরফে আলবার্ট ইকেচুকু (৩১) ২। মোছাঃ নুপুর খাতুন (২৩) ও ৩। OKECHUKWU CHRISTIAN@CHUKWAMA ওরফে ওকে চুকু (২৮)। বুধবার (২২ জুলাই) রাত ১০ টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ফেসবুক আইডিসহ বিভিন্ন ডিজিটাল আলামত ও মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ এবং প্রচুর ব্যাংকের স্লিপ উদ্ধার করা হয়।
অনলাইনে প্রতারণার বিষয়ে সাইবার অপরাধ তদন্ত বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোঃ নাজমুল ইসলাম বিপিএম ডিএমপি নিউজকে বলেন, গ্রেফতারকৃত ALBERT প্রথমে ফেসবুকে বিভিন্ন মানুষকে ফেইক আইডি থেকে ফেন্ড রিকুয়েষ্ট পাঠাত, তারপর টার্গেট ব্যক্তি যখন ফেন্ড রিকুয়েষ্ট একসেপ্ট করতো তখন তার সাথে ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে ম্যাসেজ আদান প্রদান করতো। নিজেকে একজন ফরেনার/বিদেশী নাগরিক/এমেরিকান নাগরিক বলে পরিচয় দিতো। এক সময় অনেক ম্যাসেজ আদান প্রদান করে ভালো ও ঘনিষ্ট বন্ধু হতো। একপর্যায়ে বলতো বন্ধু আমি তোমার জন্য কিছু গিফট পাঠাতে চাই, তোমাকে গ্রহণ করতে হবে কারণ তুমি আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু। গিফট পাঠানো কথা বলে কৌশলে তার নিকট হতে ই-মেইল এড্রেস এবং নাম ঠিকানা সংগ্রহ করতো এবং তারপর কয়েক দিন পর ভুয়া গিফটের ছবি তুলে তার ম্যাসেঞ্জারে ছবি পাঠিয়ে বলতো বন্ধু তোমাকে একটি পার্সেল প্রেরণ করেছি তুমি ঢাকা বিমান বন্দর থেকে গ্রহণ করো।
সাইবার অপরাধ তদন্ত বিভাগের এ কর্মকর্তা আরো জানান, গ্রেফতারকৃত নুপুর কাস্টমস্ অফিসার সালমা বলে নিজেকে পরিচয় দিয়ে ভিকটিমকে ফোন করে বলতো স্যার আপনার নামে একটি পার্সেল আসছে, আমরা আপনার ঠিকানা যাচাই করার জন্য ফোন করেছি। আপনার ঠিকানা মিলিয়ে নেন, তারপর বলতো স্যার আপনার ঠিকানায় পার্সেলটি পৌছে যাবে। তারপর কিছুক্ষণ পর আবার ফোন করে বলতো স্যার আমরা আপনার পার্সেলটি স্ক্যান করে অনেক ডলার ও সোনা পেয়েছি, এগুলো অবৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছে, এগুলো বৈধ করতে হলে আপনাকে ডলার ও সোনার জন্য সরকারী ট্যাক্স বাবদ টাকা জমা দিতে হবে। আর যদি টাকা জমা না করেন তাহলে মানিলন্ডারিং মামলা হয়ে যাবে বলে ভয় দেখাত এবং ভিকটিমকে ব্যাংক একাউন্ট নম্বর দিতো টাকা প্রেরনের জন্য।
এডিসি নাজমুল ইসলাম ডিএমপি নিউজকে আরো জানান, গ্রেফতারকৃত OKECHUKWU ১নং আসামী আলবার্টকে মোবাইল সীম সরবরাহ করাই ছিল তার প্রধান কাজ। তাছাড়া বিভিন্ন ফেসবুক আইডিতে আলবার্টের মত ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাত এবং আলবার্টকে সরবরাহ করত। তাছাড়া নুপুরকে সকল প্রকার সহযোগিতা করতো । এই চক্রটি গত দুই বছরে কোটি টাকার অধিক হাতিয়ে নিয়েছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানায় সাইবার আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।