ডিএমপি নিউজঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক এবং টেলিগ্রাম ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি ভিডিও বিক্রয় করার বিজ্ঞাপন প্রচার করার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতদের নাম- মোঃ আব্দুল হালিম, মোজাহিদ ও মোঃ আব্দুল্লাহ। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে ৩ টি মোবাইল ও ১৪টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (৯ নভেম্বর ২০২২ খ্রি.) ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সাইবার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন টিম।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সাইবার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আরিফুল হোসেইন তুহিন ডিএমপি নিউজকে জানান, বিভিন্ন অনলাইন মনিটরিং করার সময় ফেইসবুক ও টেলিগ্রামে শিশু পর্নোগ্রাফির ভিডিও সরবরাহ করা লিংক চোখে পড়ে। তখন এটি নিয়ে কাজ শুরু করে সিটি সাইবার পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ওই ফেইসবুক ও টেলিগ্রাম আইডি শনাক্ত করে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। অতঃপর বুধবার (৯ নভেম্বর ২০২২ খ্রি.) ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক এবং টেলিগ্রাম ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি ভিডিও বিক্রয় করার বিজ্ঞাপন প্রচার করে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষকে প্রলুদ্ধ করতো। তারা বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস ব্যবহার করে অবৈধ ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করতো। চাইল্ড পর্ণোগ্রাফি ভিডিও সহ সকল ধরনের পর্নোগ্রাফি ভিডিও তারা ক্লাউড ষ্টোরেজ মেগা নামক সফটওয়্যার এর মাধ্যমে সরবরাহ করতো। গ্রেফতারকৃতদের মোবাইল ফোনে বিপুল পরিমাণ পর্ণোগ্রাফি ভিডিও কন্টেন্ট পাওয়া যায়। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত পর্নোগ্রাফি ভিডিও কন্টেন্ট ইন্টারনেটের ডার্ক ওয়েব থেকে সংগ্রহ করা।
সাইবার এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ডার্ক ওয়েব থেকে তারা চাইল্ড পর্নোগ্রাফি ভিডিও, বিভিন্ন ধরণের অ্যাবিউসিভ ভিডিও সংগ্রহ করে গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ অনলাইন ক্লাউড ষ্টোরেজ মেগা ব্যবহার করে অপর গ্রেফতারকৃতদের কাছে অর্থের বিনিময়ে সরবরাহ করতো। গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ ভারতেও একই পদ্ধতিতে পর্নোগ্রাফি ভিডিও সরবরাহ করে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করতো। গ্রেফতারকৃত মোজাহিদ এবং আব্দুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক এবং টেলিগ্রাম ব্যবহার করে উঠতি বয়সের তরুণ ও যুবকদের টার্গেট করে পর্নোগ্রাফি ভিডিও কন্টেন্ট বিক্রয় করতো। গ্রেফতারকৃতরা ভূয়া পরিচয় ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস অ্যাকাউন্ট খুলে ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করতো।
রমনা মডেল থানায় রুজুকৃত মামলায় গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন মর্মে জানান সাইবার এ পুলিশ কর্মকর্তা ।
ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আ.ফ.ম আল কিবরিয়া পিপিএম (সেবা) এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ নাজমুল ইসলাম, পিপিএম এর তত্ত্ববধানে সাইবার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আরিফুল হোসেইন তুহিন এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।