ডিএমপি নিউজঃ নৈতিকতার স্খলন ঘটলে মানুষ অনেক ন্যাক্কারজনক কাজ করতে পারে। নীতি ও বিবেক ভ্রষ্ট হয়ে নিজের মানবিকতাকে বিসর্জন দিয়ে হয়ে পড়ছে পাষাণ হৃদয়ের মানব। তারই প্রমাণ হয়তো দিলো রাজধানীর সবুজবাগ থানা এলাকার এক বাসিন্দা।
রংপুরের মোছাঃ শান্তনা (২৬) এর সাথে প্রায় ৬ বছর আগে একই জেলার মোঃ মামুনের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে মাহফুজা নামের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। বয়স তার বছর দুয়েক। ভালই চলছিলো তাদের ছোট্ট সংসার। কিন্তু সেটাই মনে হল সহ্য হচ্ছিল না মামুনের। নিজের ১৪ বছর বয়সি ছোট শালীকা স্বর্ণাকে ৪ মাস পূর্বে নিজের বাসায় বেড়াতে আসতে বললে সে বেড়াতে আসে। শালীকা আসার পর মামুন তার নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে স্বর্ণাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। স্বর্ণাকে অনৈতিক প্রস্তাবের বিষয়টি বোন শান্তনা জানতে পেরে যায়। এতে তাদের সংসারে মনোমালিন্য ও ঝগড়াঝাটি হয়।
এতে শান্তনার মা সালেহা ছোট মেয়ে স্বর্ণাকে নিতে ঢাকার সবুজবাগে জামাইয়ের বাসায় আসে এবং মেয়ে নিয়ে রিক্সায় করে বাড়ির পথে রওনা হয়। কিন্তু সেখান থেকে মামুন স্বার্ণাকে নিয়ে যায়। বিষয়টি বড় মেয়ে শান্তনাকে তার মা জানালে সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। পরবর্তী সময়ে শান্তনা তার স্বামী মামুনকে একাধিকবার মোবাইল করে বোঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়াঝাটি হয়। এক পর্যায়ে মামুন তার স্ত্রী শান্তনাকে বলে ‘তুই মর, তোকে আর আমার দরকার নাই’। এই কথাই ও স্বামীর ঘৃণীত কাজের জন্য নিজের জীবনের প্রতি তিক্ত হয়ে সে গত ২২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮ টা থেকে ২৩ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮ টার মধ্যে যেকোন সময় নিজের শয়ন কক্ষে ২ বছরের শিশু মাহফুজাকে নিয়ে নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এভাবেই স্বামীর পরকিয়ার বলি হয়ে মা ও মেয়ে ঝুললো গলাই ওড়না দিয়ে। ঝুলছে মা মেয়ের লাশ ঝুলছে বিবেক।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শান্তনার মা মোসাঃ সালেহা (৪৫) বাদী হয়ে তার মেয়েকে আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে জামাই মামুনের বিরুদ্ধে সবুজবাগ থানায় মামলা করেন। থানায় মামলা দায়েরের পর স্বল্প সময়ের মধ্যে তথ্য ও প্রযু্ক্তির সহায়তায় সবুজবাগ থানা পুলিশের একটি টিম রাজধানীর উত্তরখান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামী মামুনকে গ্রেফতার ও স্বর্ণাকে উদ্ধার করে।