ডিএমপি নিউজঃ স্যার আমার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করার আগে আমাকে ভিডিও ক্লিপ এনে দেন, না হলে আমি আত্মহত্যা করব। ১৮ বছর বয়সী এক কিশোরী ভিকটিম তার মায়ের সাথে রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় এসে এমন আকুতি করে মা ও মেয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন।
এমন পরিস্থিতিতে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন তাদেরকে শান্ত হতে বলেন এবং সর্বাত্মক আইনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত বলতে অনুরোধ করেন। ভিকটিম ঘটনার বিবরণে জানায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে অজ্ঞাত আবির নামের একজনের সাথে পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে নিয়মিত চ্যাটিং হতো। একপর্যায়ে তাদের সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। বেশ কিছুদিন প্রেমের সম্পর্কের একপর্যায়ে নিজে আবেগ প্রবণ হয়ে আবিরের সাথে আপত্তিকর ভিডিও চ্যাট করেন। আবির সেই ভিডিও চ্যাট গোপনে নিজের মোবাইলে সেভ করে রাখে। বেশকিছুদিন যেতেই অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে এমন মিথ্যা দোষ দিয়ে ভিকটিমের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় আবির। হঠাৎ ০৩ অক্টোবর ভিকটিমের হোয়াটস অ্যাপে আপত্তিকর ছবি (আপত্তিকর ভিডিও চ্যাট) পাঠায় আবির। ভিকটিমের হোয়াটস অ্যাপে টাকা দাবি করে এবং তার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দিবে মানসিক নির্যাতন করে আবির। যদি তাকে টাকা না দেওয়া হয় এবং তার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক না করে তাহলে আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। এমন বর্ণনা দিতে গিয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন ভিকটিম ও তার মা। আর বলতে থাকেন স্যার আমাকে বাঁচান, না হলে আমি আত্মহত্যা করবো।
খিলক্ষেত থানার ওসি তাদেরকে আশ্বাস্ত করে এই বিষয়ে ৭ অক্টোবর ২০২০ মামলা রুজু করে তাৎক্ষণিক বিষয়টি অতীব গুরুত্বের সাথে নিয়ে অজ্ঞাতনামা আবিরের অবস্থান সনাক্ত করার চেষ্টা শুরু করেন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে আবিরের অবস্থান সনাক্ত করা হয়। কিন্তু অত্যন্ত চতুর আবির ঘন ঘন তার অবস্থান পরিবর্তন করার এক পর্যায়ে ০৭ অক্টোবর অনুমান ১৯.২০ টায় মিরপুর-১ গোলচত্বর হতে আবিরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর আবিরের মেসে গিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ থেকে ভিকটিমের আপত্তিকর ছবিসহ ভিডিও ক্লিপ এবং আরো অনেক মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও দেখতে পেয়ে জব্দ করে খিলক্ষেত থানা পুলিশের টিম।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে ওসি খিলক্ষেত ডিএমপি নিউজকে বলেন, গ্রেফতারকৃত আবির দীর্ঘদিন ধরে স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে অনেক মেয়েকে এভাবে ফাঁদে ফেলে মোটা অংকের টাকা আদায় করে আসছে।
আসামী গ্রেফতারসহ ভিকটিমের ভিডিও ক্লিপ উদ্ধার করা হয়েছে জানতে পেরে ভিকটিম স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন এবং আত্মহত্যা করবেন না বলে পুলিশকে আশ্বাস্ত করেন।