ডিএমপি নিউজ: সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল আশংকাজনক হারে বেড়েই চলেছে। যদিও কিছুদিন পূর্বে কিশোর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশব্যাপী গড়ে তোলা অন্দোলন জনসাধারনের মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় তৈরি করে। সে সময় রাস্তায় নেমে এসেছিল লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এই আন্দোলন পরবর্তী সময়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হলেও সড়ক দুর্ঘটনা প্রত্যাশিত মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ফলে এখনও প্রতিটি সড়কে অনিরাপদ যাত্রা আর মৃত্যু শংকায় প্রহর গুনতে হয় পথযাত্রীদের।
এমন-ই এক প্রেক্ষাপটে আজ ৬ অক্টোবর, ২০১৮ শনিবার দুপুরে রাজধানীর তেঁজগাওস্থ এফডিসিতে ‘সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চালকের সর্তকতা নিয়ে’ ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে এক ছায়া সংসদ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালকের একটি বিশাল ভূমিকা রয়েছে। চালকের একার পক্ষে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়। আমাদের দেশে আইন না মানার সংস্কৃতি সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ। এছাড়া যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী তোলা এবং যত্রতত্র পারাপার সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
কমিশনার আরও বলেন, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন, ফুটওভার ব্রীজ ও জেব্রা ক্রসিংয়ের সঠিক ব্যবহার করলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। আসুন আমরা নিজেরা পরিবর্তন হই, নিজেরা সচেতন হই, আইন মানি এবং পরিবারের সকলকে আইন মানার প্রতি উদ্বুদ্ধ করি। তাহলেই ভবিষ্যতে আমাদেরকে আর কোন অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা দেখতে হবে না এবং নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, প্রত্যেকটি সড়ক দুর্ঘটনা একটি পরিবারকে ছিন্নভিন্ন, অসহায় করে তোলে। লাইসেন্স বিহীন চালক দিয়ে গাড়ি চালানো, অ-অনুমোদিত ও ফিটনেস বিহীন গাড়ি, রোড সংকেত না মানা, পথচারীদের বেপরোয়া চলাফেরা, জেব্রাক্রসিং না মানা, ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার না করা সর্বোপরি চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো সড়ক দুর্ঘটনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিছু কিছু চালকদের পাল্লাপাল্লি এবং কার আগে কে যাবে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে গাড়ি চালানোর কারনেও সড়ক দুর্ঘটনা প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চালকের বিরামহীন গাড়ি চালানোও সড়ক দুর্ঘটনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। উন্নত দেশগুলোতে প্রতি চারঘন্টা অন্তর গাড়িচালকদের বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ এবং দিনে সর্বোচ্চ ৯ ঘণ্টা গাড়ি চালানোর বিধান রয়েছে। অথচ আমাদের দেশে একজন চালকের গাড়ি চালানোর কর্মঘণ্টা বলে কিছুই নেই। গড়ে প্রতিনিয়ত একজন গণপরিবহনের ড্রাইভারকে ১২-১৬ ঘণ্টা গাড়ি চালাতে হয়।
প্রতিযোগিতায় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি একে অপরের মুখোমুখি হয়।