ডিএমপি নিউজঃ বিশ্বের মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র স্থান কাবা। আর মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় জমায়েত হচ্ছে হজ। সারা পৃথিবী থেকে লক্ষ লক্ষ মুসলমান প্রতি বছর হজ করতে সৌদি আরবে যান। প্রতি বছর হজ পালন করতে যাওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু তারপরেও অনেক মুসলিম তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী নির্দিষ্ট বছর হজে যেতে পারেন না। এর একটি প্রধান কারণ হচ্ছে, কোন্ দেশ থেকে কত মানুষ হজে যেতে পারবেন, তার একটি কোটা রয়েছে।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ থেকে সৌদি আরবকে ক্রমাগত অনুরোধ করা হচ্ছে হজের কোটা বাড়ানোর জন্য।
২০২০ সালের জন্য বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে হজ সংক্রান্ত যে চুক্তি সাক্ষর করা হয়েছে সেখানে বাংলাদেশিদের হজ কোটা ১০ হাজার বৃদ্ধি করা হয়েছে। অর্থাৎ আগামী বছর ১ লক্ষ ৩৭ হাজার বাংলাদেশী হজে যেতে পারবেন।
২০১৯ সালে ভারত থেকে হজের কোটা বাড়ানো হয়েছে। এটি ১ লক্ষ ৭০ হাজার থেকে বাড়িয়ে দুই লক্ষ করা হয়েছে।
পাকিস্তান থেকেও দুই লক্ষ মুসলিম হজ করতে গিয়েছেন। যদিও ২০২০ সালের জন্য এই সংখ্যা আরো ২০ হাজার বাড়ানোর দাবি করেছে পাকিস্তান। মালয়েশিয়া থেকে ২০১৯ সালে প্রায় ৩০ হাজার মুসলিম হজ পালন করতে গিয়েছিলেন। মালয়েশিয়াও এ কোটা বাড়ানোর দাবি করেছে।
যে ভাবে হজ কোটা নির্ধারিত হয়ঃ
হজের জন্য সৌদি আরবকে বিশাল আয়োজন করতে হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন বা ওআইসি’র একটি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হজের এই কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। ওআইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি দশ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে এক হাজার জন হজে যেতে পারবে।
কিন্তু কোটা ব্যবস্থার কারণে অনেকেই তাদের পছন্দ অনুযায়ী বছরে হজে যেতে পারেন না বলে । ২০২০ সালে হজ পালনের জন্য বাংলাদেশ থেকে এরই মধ্যে প্রায় এক লক্ষ সাতষট্টি হাজার মানুষ প্রাক নিবন্ধন করেছে। কিন্তু নতুন চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবে এক লক্ষ সাইত্রিশ হাজার।
জেনে নিন বাংলাদেশ থেকে হজে যাবার প্রক্রিয়া সম্পর্কেঃ
বাংলাদেশের বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী হজে যেতে আগ্রহীদের অনলাইনে প্রাক নিবন্ধন করতে হয়। এই নিবন্ধন সারা বছরই চলে। হজ পালনের কয়েকমাস আগে সরকারের তরফ থেকে চূড়ান্ত নিবন্ধনের আহবান জানানো হয়। সেক্ষেত্রে যারা আগে প্রাক নিবন্ধন করেন, তালিকায় ক্রমানুসারে তারাই চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে পারেন।
“চূড়ান্ত নিবন্ধনের জন্য সরকার সময় নির্ধারণ করে দেয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেউ যদি নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তালিকা থেকে ক্রমানুসারে অন্যদের সুযোগ দেয়া হয়।
বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক সামর্থ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় হজে যাবার প্রবণতাও বাড়ছে। কিন্তু কোটার কারণে সবাই সময়মতো যেতে পারছেন না। সেজন্য বাংলাদেশ থেকে ওমরা হজ করার প্রবণতা অনেক বেড়েছে মর্মে বিশ্লেষকরা মনে করেন।
সূত্রঃ বিবিসি বাংলা