ভারতে হোয়াটসঅ্যাপে ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে নিরীহ মানুষকে। দেশটির গুজরাট থেকে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, অন্ধ্র প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশাসহ নানা রাজ্যে গত দেড়মাসে অন্তত ১৪জন মানুষকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়েছে। সর্বশেষ ঘটনাটি হয়েছে ত্রিপুরায়, যেখানে ৪জনের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ বলছে, গত মাসের ২৭ আর ২৮ তারিখ সেরাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে ৪ জনকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এদের মধ্যে আছেন সুকান্ত চক্রবর্তী যাকে কিনা সরকারই পাঠিয়েছিল এই অপপ্রচার রোধ করতে।
একজন নারীকেও ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে মারা হয়েছে। জনতার রোষে পড়ে মারা গেছেন উত্তরপ্রদেশ থেকে ত্রিপুরায় নানা জিনিষ ফেরি করতে আসা এক ব্যক্তি। যারা আহত হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন পরে হাসপাতালে মারা যান।
পুলিশ জানায়, হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে গুজব রটানো হচ্ছে যে বাইরে থেকে ছেলেধরার দল এসেছে। মেসেজগুলির বয়ান মোটামুটি একই রকম, কিন্তু একেকটি এলাকায় সেগুলিকে অনুবাদ করে দেওয়া হচ্ছে। একটি ছোট ভিডিও জুড়ে দেওয়া হচ্ছে মেসেজের সঙ্গে। ওই ভিডিওটির উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে সেটি পাকিস্তানের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তৈরি শিক্ষামূলক প্রচার ফিল্মের অংশ।
বিবিসি সূত্রে জানা যায়, ছেলেধরার গুজব ছড়িয়ে গণপিটুনির একের পর এক ঘটনা এখন সামনে এলেও অতীতেও এই ঘটনা হয়েছে কলকাতাতেও। ১৯৮২ সালে কলকাতার বালিগঞ্জে ছেলেধরা সন্দেহে ১৭ জন আনন্দমার্গী সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনীকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। ১৯৯০ সালে কলকাতার কাছেই বানতলাতে ছেলেধরা সন্দেহে গণধর্ষণ করা হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক নারী কর্মকর্তাসহ তিনজন সরকারি স্বাস্থ্য অফিসারকে। ওই ঘটনায় একজন মারা যান।