এই বোতলের ভেতরে জার্মান ভাষায় লেখা কিছু বার্তা গুটিয়ে ভাঁজ করে ভরে দেওয়া হয়েছে। ওই কাগজে সাল তারিখ হিসেবে ১৮৮৬ সালের কথা লেখা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বোতলটি জার্মানির একটি জাহাজ থেকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিলো ভারত মহাসাগরে। এবং সামুদ্রিক স্রোতের গতিপথের উপর পরীক্ষা চালানোর জন্যে এই বোতলটি নিক্ষেপ করা হয়েছিলো।
যে নারী টনিয়া ইলম্যান বোতলটি প্রথম দেখতে পান তিনি মনে করেছিলেন বিষয়টি সত্য ঘটনা নয়। কেউ হয়তো মজা করার জন্যে এরকম একটা ঘটনা তৈরি করেছে। কিন্তু পরে অস্ট্রেলিয়ার একটি জাদুঘর বোতলের ভেতরের বার্তাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
পার্থ শহরের একটি পরিবার এই বোতলটি সমুদ্র সৈকতে কুড়িয়ে পেয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৩২ বছর আগে বোতলটি সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিলো। টনিয়া ইলম্যানের স্বামী কিম ইলম্যান বলেছেন, বোতলের ভেতরে তারা কিছু কাগজ দেখতে পান কিন্তু সেগুলো যে কী সেবিষয়ে তাদের কোন ধারণা ছিলো না। তারা সেটি বাড়িতে নিয়ে যান এবং ওভেনের ভেতরে ঢুকিয়ে ভালো করে শুকিয়ে নেন। দেখতে পান, বোতলের ভেতরে রাখা কাগজে লেখা রয়েছে ১২ই জুন ১৮৮৬।
বলা হচ্ছে, জার্মান ন্যাভাল অবজারভেটরি থেকে এই বোতলটি সমুদ্রে ফেলা হয়েছিলো জাহাজের রুট সম্পর্কে কিছু ধারণা পাওয়ার জন্যে। এর আগে এরকম বোতলের ভেতরে সবচেয়ে পুরনো যে বার্তা পাওয়া গিয়েছিলো সেটি ছিলো ১০৮ বছরের পুরনো।
টনিয়া ইলম্যান বোতলটি কুড়িয়ে পাওয়ার পর ভেবেছিলেন এটিকে তিনি তার বুক শেল্ফে সাজিয়ে রাখবেন। কিন্তু পরে তিনি দেখতে পান এর ভেতরে কিছু একটা লেখা। সেখানে উল্লেখ করা আছে কেউ যদি এই বোতলটি কুড়িয়ে পান তাহলে জার্মান কনস্যুলেটের সাথে যোগাযোগ করুন। সেখানে জাহাজের নামও উল্লেখ রয়েছে- পাওলা।
ইলম্যান পরিবারটি বলছে, এই বোতলটি পাওয়ার ঘটনা তাদের জীবনের সবচেয়ে নাটকীয় এক বিষয়। বলা হচ্ছে, ৬৯ বছর ধরে চালানো জার্মানির এই পরীক্ষার সময় ৬৬২টি বার্তাবাহী বোতল সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিলো এবং তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত একটি বোতলও ফিরে আসেনি। এধরনের নোট লেখা শেষ বোতলটি পাওয়া গিয়েছিলো ১৯৩৪ সালে, ডেনমার্কে। বিবিসি বাংলা।