যুক্তরাষ্ট্রে বিয়ের জন্য নির্ধারিত সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর। তবে মা-বাবার সম্মতি বা গর্ভাবস্থার কারণে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিয়ের অনুমোদন দেয় দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রে গত ১৫ বছরে ২ লাখেরও বেশি শিশুর বিয়ে হয়েছে। এদের মধ্যে ১০ বছর বয়সী তিনটি মেয়ে ও ১১ বছর বয়সী একটি ছেলেও রয়েছে। প্রচলিত আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে এসব শিশুর বিয়ের অনুমোদন দেয় দেশটি। সম্প্রতি প্রকাশিত নতুন পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাল্যবিবাহের এ চিত্র আরও ভয়াবহ হতে পারে। কারণ দেশটির ১০টি অঙ্গরাজ্য বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি অথবা অসম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে। বেসরকারি সংস্থা আনচেইনডের প্রতিষ্ঠাতা ফ্রাইডে রেইস বলেন, বাল্যবিবাহসংক্রান্ত নিউ জার্সির তথ্য-উপাত্ত পেয়ে তিনি প্রকৃত অর্থে ধাক্কা খেয়েছেন। কারণ তাদের প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত ছিল ভয়াবহ। ১৯৯৫ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সেখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে। ওইসব ক্ষেত্রে শিশুদের অধিকাংশেরই বয়স ছিল ১৩ বছর এবং তাদের বিয়ে হয় প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের সঙ্গে।
এ বছর মে মাসে নিউ জার্সির প্রভাবশালী রিপাবলিকান গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টি বাল্যবিবাহ রোধে আনা একটি আইনে সই করতে অস্বীকৃতি জানান। ক্রিস্টির দাবি, আইনটি ধর্মীয় রীতিনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তবে ক্রিস্টির বিরোধিতার পরও বিলটি ইতোমধ্যে দেশটির আইনসভার উভয় কক্ষ অনুমোদন দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ২০০০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে অন্তত ২ লাখ ৭ হাজার ৪৬৮টি বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে। বাল্যবিবাহ রোধে কাজ করা এমন কিছু সংস্থা এবং এ সংক্রান্ত অনুসন্ধানী তথ্যচিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রন্টলাইনের জরিপে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
আলাস্কা, লুইজিয়ানা ও সাউথ ক্যারোলাইনায় ১২ বছরের শিশুদের বিয়ের অনুমোদন আছে। অপর ১১টি অঙ্গরাজ্যে ১৩ বছরে বিয়ে করার অনুমতি আছে। ১৪ বছর বা তার নিচের এক হাজারের বেশি শিশু বিয়ের অনুমতি পেয়েছে। দেশটির বেশির ভাগ অঙ্গরাজ্যে যৌন সম্মতির বয়স ১৬ থেকে ১৮ নির্ধারণ করা আছে। কোনো ব্যক্তি যদি শিশুর সঙ্গে যৌন সংসর্গে লিপ্ত হয়, তবে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণেরও অভিযোগ আনা যাবে। তবে বাল্যবিবাহের এসব ঘটনা বিচারক দ্বারা অনুমোদন হয়ে থাকে। ফলে যৌন নির্যাতনের নানান অভিযোগ সেভাবে প্রকাশ্যে আসে না। তথ্যসূত্র: ইনডিপেনডেন্ট।