ডিএমপি নিউজঃ জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফীন দীপন হত্যা মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৮ জন সদস্যকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই আদালতে দাখিল করা হবে এই মামলার অভিযোগপত্র।
আজ ৩০ অক্টোবর ২০১৮ দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এসে উপস্থিত সাংবাদিকদের এমনটি জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, এই মামলা তদন্তকালে দীপন হত্যাকান্ডের সাথে ৯ জনের সম্পৃক্ততা থাকার প্রমান পেয়েছি। ৯ জনের মধ্যে ৮ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র গঠন করা হয়েছে। বাকি একজনের ছবি আমরা পেয়েছি কিন্তু তার সম্ভাব্য ঠিকানা, থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রচারণা চালিয়েও তার নাম ঠিকানা জানতে না পারায় অভিযোগপত্র থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে তাকে সনাক্ত করা গেলে তাকে যুক্ত করে আদালতে সম্পুরক অভিযোগপত্র দেয়া হবে।
অভিযুক্তরা হলো- (১) মইনুল হাসান শামীম (২৪) সাংগঠনিক নাম সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান, (২) মোঃ আঃ সবুর (২৩) সাংগঠনিক নাম আঃ সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে স্বাদ, (৩) খাইরুল ইসলাম (২৪) সাংগঠনিক নাম জামিল ওরফে রিফাত ওরফে ফাহিম ওরফে জিসান, (৪) মোঃ আবু সিদ্দিক সোহেল (৩৪) সাংগঠনিক নাম সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, (৫) মোঃ মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (২৫) সাংগঠনিক নাম শাহরিয়ার, (৬) মোঃ শেখ আব্দুল্লাহ (২৭) সাংগঠনিক নাম জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের, (৭) সৈয়দ জিয়াউল হক (৫০) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর বলে কথিত সাংগঠনিক নাম সাগর ওরফে ইশতিয়াক ওরফে বড় ভাই ও (৮) আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব (২৮) সাংগঠনিক নাম আবির ওরফে আদনান ওরফে আব্দুল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, প্রকাশক দীপন হত্যাকান্ডের মূলপরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর বলে কথিত সৈয়দ জিয়াউল হক। ৮ জনের মধ্যে ৬ জনকে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক ২ জন হচ্ছে সৈয়দ জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এই মামলার তদন্ত দীর্ঘ সময় হওয়ার কারণ জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেটে নিজ প্রকাশনীতে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে প্রকাশক ফয়সাল আরেফীন দীপনকে। মামলাটি রুজু হয়েছিল অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে। মামলাটি ছিল ক্লুলেস। আমরা বিভিন্ন সূত্রধরে ক্লুলেস মামলাটি তদন্তকালে জানতে পারি দীপনের প্রকাশনী থেকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনে এমন বই প্রকাশ করাই এই হত্যার কারণ। তদন্তের এক পর্যায়ে আমরা এই হত্যার পেছনে জড়িত ৯ জনকে সনাক্ত করি। তার মধ্যে একজনের পরিচয় জানা যায়নি।
আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীদের দেয়া তথ্য মতে এক এক আসামীকে বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করে এই ক্লুলেস মামলার তদন্ত শেষ করেছি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনের বিষয়ে সিটিটিসি প্রধান বলেন, মামলাটি সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অপরাধ হওয়ায় আদালতে চার্জশীট দাখিলের পূর্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হয়। আমরা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অনুমোদন মিললেই আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হবে।