উন্নয়ন কার্যক্রম সমন্বয় সহজ ও অধিকতর কার্যকর করতে শিক্ষার মাধ্যমিক স্তরের আলাদা আলাদা প্রকল্পের পরিবর্তে এখন থেকে সকল উন্নয়ন প্রকল্পের সমন্বয়ে একটি প্রোগ্রাম গ্রহন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ‘সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রেগ্রাম (এসইডিপি)’ শীর্ষক বৃহৎ এই কর্মসূচির মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষার সকল প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
আজ (৩১ অক্টোবর) ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বে মানসম্মত শিক্ষা সবচেয়ে অগ্রাধিকার ইস্যুতে পরিনত হয়েছে। মানসম্মত শিক্ষা জীবনের বাস্তবতা মোকাবিলায় একাডেমিক শিক্ষার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখে। এসইডিপি শিক্ষার মান উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাশ এবং বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহামুদ-উল-হক প্রোগ্রাম সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘এসইডিপি প্রোগ্রামের আওতায় শিখন-শেখানো পদ্ধতির উন্নয়ন, শিক্ষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, কারিকুলাম উন্নয়ন, ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, উন্নত শিক্ষক ব্যবস্থাপনা, নিয়োগ ও তত্ত্বাবধান, বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে কারিকুলামের সামঞ্জস্য বিধান, শিক্ষকতার পেশাগত মান উন্নয়ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। মাধ্যমিক স্তরের সবগুলো প্রকল্প এ কর্মসূচির (প্রোগ্রাম) অধীনে বাস্তবায়িত হবে।’
মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ- মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা পুরোপুরি পুনর্গঠন করা হচ্ছে। কারিগরি শিক্ষায় ২০২০ সালের মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগ এনরোলমেন্ট নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ পুনর্গঠন কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। জাতীয় উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় এটি সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এ লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তাসহ বিভিন্ন সমর্থন দেয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
২০২১ সালের মধ্যে সকল প্রতিষ্ঠানকে পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় আনা একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এসইডিপির এর আওতায় ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ, ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি, ডিজিটাল ল্যাব ও লাইব্রেরি তৈরি হবে। বিদ্যালয়সমূহের প্রতিদিনের কার্যক্রম অনলাইন মনিটরিং ব্যবস্থা চালু হবে।
৫ বছর মেয়াদি এ প্রোগ্রাম ২০১৮ থেকে ২০২২ অর্থবছর মেয়াদে বাস্তবায়ন হবে। এ কর্মসূচির প্রাক্কলিত ব্যয় ১৭.২ বিলিয়ন ইউএস ডলার (১৭ হাজার ২০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার)। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ১৬ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার। অবশিষ্ট ৫০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নের পরিমান হবে ২২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। বিশ্বব্যাংক আরো ১০ মিলিয়ন ইউএস ডলার জিএফএফ গ্রান্ট হিসেবে প্রদান করবে।