ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর খিলক্ষেত থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান করে একই পরিবারেব প্রধানসহ ০৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি’র গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- নাইজেরিয়ার নাগরিক ইমানুয়েল ইকেনেদিলিচুকও আসুজু (২৭), নাইজেরিয়ার নাগরিকের স্ত্রী মোছাঃ লতা বেগম (২৩), লতার বোন পাপিয়া বেগম (২২), লতার বোনের স্বামী মোঃ হাবিব (২৫), হাবিব এর বাবা মোঃ জয়নাল আবেদীন (৪৫), হাবিব এর মা মোছাঃ হামিদা আক্তার (৩০), লতার আত্মীয় মোছা ঃ রুমা আক্তার (১৯), রুমার স্বামী মোঃ শুক্কুর আলী (২৫)।
গত ৩ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে বনানী থানায় রুজুকৃত মামলায় তাদেরকে ৫ নভেম্বর খিলক্ষেত থানার নামাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখ Frank William নামে স্কটিশ নাগরিক মামলার বাদীর ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট পাঠালে বাদী উক্ত রিকুয়েষ্ট একসেপ্ট করে। পরবর্তীতে বাদীর সাথে Frank William এর হোয়াটস্ আপ, ম্যাসেঞ্জারে মাধ্যমে ভাল বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ঐ স্কটিশ ভদ্রলোক গত ২৩ মার্চ ২০১৮ তারিখ বাদীকে ইস্টার সানডে উপলক্ষে একটি গিফট পাঠানোর কথা বলে। পরবতীতে বাংলাদেশী মেয়ে রোজিনা, ফাতেমা, লতা বাদীকে মোবাইল ফোনে গিফট এসেছে বলে বাদীকে জানায় এবং এর গিফট ছাড়ার জন্য ট্যাক্স বাবদ ৫০ হাজার টাকা জমা দিতে বললে বাদী গত ২৭মার্চ ২০১৮ তারিখ ডাচ্ বাংলা ব্যাংক মহাখালী শাখায় উক্ত টাকা জমা দেয়। একই ভাবে ২৮ মার্চ ২০১৮ তারিখ ওয়ান ব্যাংক গুলশান শাখায় ২,৮৫,০০০ টাকা জমা দেয়। পূনরায় উল্লেখিত বাংলাদেশী মেয়ে লতা, ফাতেমা, রোজিনা সাউথ ইষ্ট ব্যাংক একাউন্টে আরো পাঁচ লক্ষ টাকা প্রদান করার কথা বললে বাদী বুঝতে পারে সে প্রতারিত হয়েছে। বাদী প্রতারিত হয়ে প্রতারকদের বিরুদ্ধে ৩ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে বনানী থানায় একটি মামলা করেন।
পরবর্তী সময়ে গোয়েন্দা বিভাগে মামলাটি স্থানান্তর হলে বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশ^স্ত গুপ্তচর নিয়োগ করে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের বিমান বন্দর জোনাল টিম। প্রতারকদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ০৫ নভেম্বর ২০১৮ তারিখ অনুমান ১৪.৪৫ টায় খিলক্ষেত থানাধীন নামাপাড়াস্থ কামাল দর্জির বাড়ী থেকে আসামী মোছা ঃ রুমা আক্তার ও তার স্বামী মোঃ শুক্কুর আলী কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাদেরকে অত্র মামলার ঘটনায় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা এই মামলার বাকি পলাতক আসামীদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে গোয়েন্দা পুলিশকে তথ্য দেয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যান্য আসামীদের খিলক্ষেত থানার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, লতার স্বামী নাইজেরিয়ান নাগরিক ইমানুয়েল মোবাইলে ফেসবুক, ম্যাচেঞ্জার, হোয়াট্স আপ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন নারীদের নিকট ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট মাধ্যমে বন্ধুত্ব স্থাপন করে। এক পর্যায়ে সরলতার সুযোগে উপহার পাঠানোর কথা বলে হাবিবের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে একাধিক একাউন্ট খুলে তাতে প্রেরিত উপহার কাস্টমস থেকে ছাড়ানোর কথা বলে টাকা চায়। উক্ত টাকা নাইজেরিয়ার নাগরিক ইমানুয়েল এর হাতে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে দিলে প্রতারক পরিবারে প্রত্যেকে প্রতি লেনদেন বাবদ ৫ হাজার টাকা করে পেত।