হায়দরাবাদ এখন খবরে চলে এসেছে ওদের এক আফগান তরুণ ক্রিকেটারের সৌজন্যে। রশিদ খান ওর বোলিং দক্ষতার ঘষামাজা করেছে এমন এক জায়গায় যেখানে গুলির আওয়াজ আর বোমা বিস্ফোরণ প্রতি মুহূর্তে শোনা যায়।
আফগানিস্তানের ওই পরিবেশে রশিদের ক্রিকেট প্রস্তুতির কথা শুনলে মাথা যেন কেমন ঘুরে যায়। মাঠেও ওর পারফরম্যান্স মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বিশ্বের সেরা সেরা ব্যাটসম্যান ডিফেন্স করতে গিয়ে ওর বলে এলবিডব্লিউ হচ্ছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে রশিদের বলের রহস্যটা সহজে বুঝতে পারছে না ব্যাটসম্যানরা।
হায়দরাবাদ সানরাইজার্স টিমটায় আইপিএলে-র সেরা বাঁ-হাতিরা রয়েছে। ডেভিড ওয়ার্নার, যুবরাজ সিংহ, শিখর ধবন। তা ছাড়াও ওদের দলে আরও কয়েক জন বিগ হিটার আছে। ওরাই এখনও একমাত্র দল যারা এই আইপিএলে দু’শোর ওপর রান তুলেছে। বুধবারও ওদের মোটামুটি সে রকম একটা স্কোর তুলতে হবে। কারণ ওরা এমন একটা টিমের বিরুদ্ধে নামছে যারা বেশির ভাগ দিনেই ১৭০ রানের ওপর তুলে দেবে।
হায়দরাবাদ এখন মুম্বইয়ে। আর ওদের প্রতিপক্ষ এমন একটা দল, যে টিমের প্লেয়াররা অভিনেতা হলে বলাই যেত, বহুমুখী প্রতিভার জন্য ওদের অস্কার নিশ্চিত। মুম্বই দলের সবাই প্রায় ব্যাটিং-বোলিং— দু’টোই করতে পারে। এই টিমের মহাতারকারাই শুধু আপনাকে ধাক্কা মারবে না, দলে আরও অনেকে এমন আছে যারা আপনাকে আঘাত করে অদৃশ্য হয়ে যাবে।
মুম্বইয়ের মোকাবিলা করতে গেলে প্রতিপক্ষ টিমের সবাইকে নিজের সেরাটা দিতে হবে। সেটা যদি সানরাইজার্স হায়দরাবাদ করতে পারে, তা হলে এই আইপিএলে ওদের ঘোড়া ভাল মতোই ছুটতে থাকবে।
এটা পরিষ্কার, রশিদের হাত দেখে বোঝা যাচ্ছে না কোনটা লেগব্রেক আর কোনটা গুগলি হবে। ওর নিখুঁত নিশানা আর গতির হেরফের ব্যাটসম্যানদের চাপে রেখে যাচ্ছে। দেখা গিয়েছে, ডেথ ওভারেও ভাল বল করার ক্ষমতা আছে এই ছেলেটার। সানরাইজার্সের উচিত হবে রশিদের ওভারগুলোকে পুরো ইনিংসে ঠিক মতো কাজে লাগানো। আমি একটুও অবাক হব না, যদি দেখি ওকে এক সঙ্গে পুরো কোটা না করিয়ে ইনিংস জুড়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
রশিদ এবং বাকিদের কিন্তু বুধবার একটা বড় পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে। মুম্বই ওপেনাররা একেবারে টেরিয়ারের মতো একগুঁয়ে। আর ওদের ব্যাটিং গভীরতা এত বেশি যে রোহিত শর্মার ব্যর্থতাও বিপদের ঘণ্টা বাজায় না। রান তাড়া করার সময়ই মুম্বই সবচেয়ে বিপজ্জনক দল। হায়দরাবাদ নিশ্চয়ই চাইবে টস জিতলে সেই সুযোগটা ওদের না দিতে। ওয়াংখেড়ে-তে আরও একটা দারুণ লড়াই কিন্তু আমরা দেখতে যাচ্ছি।