সমুদ্রের গভীরতম স্থান মারিয়ানা ট্রেন্স যেটা কিনা মারিয়ানা আইল্যান্ড এর পাশেই অবস্থিত। সমুদ্রের সব থেকে গভীর স্থান যেটা কিনা ইংরেজী ভি আকৃতির। এটা এতোটাই গভীর যার ভিতরে এভারেস্ট পর্বত সৃংগকে অনাসেই ডুকিয়ে দেওয়া যাবে। এটা ১ হাজার ৫০০শ মিটার লম্বা এবং ১১ হাজার মিটার গভীর। তবে গভীরতার সঠিক পরিমাপ বিজ্ঞানীরা নিতে পেরেছে কিনা এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরাও কনফিউসড। তবে যাই হোক সাগরের গভীরতা ১১ হাজার থেকে সর্বচ্চ ১৫ হাজার মিটার হতে পারে।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সাগরের গভীরতায় বিভিন্ন স্থানে কি কি আছে। সাগরের ৩০০ ফুট নিচে যখন আপনি যাবেন তখন দেখবেন নীল তিমিকে। সাগরের ৩০০ ফুট নিচে এরা ঘুরে বেড়ায়।
৭০০ ফুট গভীরে সাবমেরিন গুলো চলে সর্বপ্রথম আমেরিকা এতো নীচে দিয়ে সাবমেরিন চালিয়েছিল। ৮৩১ কিলোমিটার গভীরতা যেখানে অনেক বেশি প্রেসার থাকে। যা কিনা মানুষের ফুসফুস চূর্ণবিচূর্ণ করে দিতে পারে। এই ৮৩১ মিটার পরের থেকেই আপনাকে নীচে নামতে হলে নতুন নতুন যন্ত্র আবিষ্কার করতে হবে নিজেকে সেফ করার জন্য । নীল তিমি তার খাবার শিকার করার জন্য ১৬০০ মিটার পর্যন্ত নেমে যায় ।
২৪০০ ফুট এই গভীরতা। এই গভীরতায় বর্তমানে যে সাবমেরিন গুলো আছে তার গঠনগত দিক দিয়ে ক্ষতি হতে পারে এর নীচে সব ধরনের সাবমেরিন পাঠানো সম্ভব না বলে জানিয়েছে বিজ্ঞানীরা ।
২৭২২ মিটার নীচে এই গভিরতায় বিশ্বের সর্বোচ্চ বিল্ডিং বুর্জ খলিফা অনাশেয় ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে। ৩২৮০ মিটার এই গভীরতায় সূর্যের আলো পৌছাতে পারে না । এখানের জীবন যাত্রার সাথে আমাদের পৃথিবীর কোনো সম্পর্ক নেই ।
৭ হাজার ৫০০ ফুট নীচে একে বলা হয়ে মিডনাইট জোন। এতো নিচেও কিন্তু অনেক প্রাণী বসবাস করে যারা দেখতে পায় না যেমন এক প্রজাতির চিংড়ি । কেখানে রয়েছে আগ্নেয়গিরি । এখানে তাপমাত্রা থাকে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস । কিত্নু এমন কিছু যায়গা আছে যেখান আগ্নেয়গিরি সেখানের তাপমাত্রা ৮০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মতো ।
অজানা রহস্য
১২৫০০ ফুট গভীর এটা হলো সেই যায়গা যেখানের গভীরতা টাইটানিক জাহাজ যে যায়গায় ডুবেছিল সেই যায়গার গভীরতার সমান। এখানে আজ পযন্ত মানুষ পৌঁছাতে পারেনি। এখানকার চাপ ভুপৃষ্ট থেকে ৩৭৮ গুন বেশি। এখানে এতো চাপেও অনেক প্রাণী বসবাস করে যেমন ফেংঠুথ, হাগফিস। ডাম্ব অক্টপাস । ২ হাজার ফুট গভীরতা এই ২০ হাজার ফুট গভীরতা এর থেকে অনেক বেশি গভীরতা একমাত্র মারিয়ানা ট্রেঞ্চেই আছে তাছাড়া অন্য খুব কম সংখ্যক খাতে পাওয়া যায় ।
১৯৬০ সালে জেবস পিকারড নামক একজন বিজ্ঞানী সমুদ্র গভিরতার একটা চ্যালেঞ্জ গ্রহন করে। তিনি মারিয়ানা ট্রেঞ্চে যায় এবং সাবমেরিন নিয়ে ভিডিও করতে করতে নিচের দিকে নামতে থাকে । জেক্স ১ হাজার কিলোমিটার নীচে নেমেছিল এবং ২০ মিনিট সময় ছিল । সেই ২০ মিনিটে যা দেখেছিল তাতে এটা প্রমান করে যে ১০০০ ফুট নিচেও প্রাণীর বসবাস রয়েছে । যেখানের চাপ প্রায় প্রতি স্কোয়ার মিটারে ৩ টন সেখানে নরমাল লোহা অনাসেই বেকে যেতে পারে । কিন্তু এতো চাপ থাকা সত্বেও অনেক প্রাণী এখানে বসবাস করে যারা অনেক ভয়ঙ্কর এবং অজানা বীভৎস প্রাণী ।
১৯৬০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েকটি সাবমেরিন সমুদ্রের গভীরে পাঠান তারমধ্যে কাইকো নামক একটি সাবমেরিন ৩ হাজার ৫০০ মিটার পর্যন্ত যায় এবং ৩০০ এর বেশি নতুন প্রজাতির ছবি উপরে নিয়ে আসে ।
আমাদের সাগরের গভীরতার ঠিক একটা পরিমাপ অবশ্যই আছে । কারন সমুদ্র তো আমাদের গোলাকার পৃথিবীর মধ্যেই, এটা মহাকাশ না, যে যার কোনো সীমানা নেই, তবে সমুদ্রের নীচে রয়েছে পৃথিবীর মতো সমতল ভুমি আবার পাহাড়ও আরও রয়েছে হাজার হাজার প্রজাতির প্রাণী যা মানুষের ধারনার বাহিরে । যতো দিন যাবে বিজ্ঞানের নতুন আবিস্কার সম্পর্কে মানুষ জানতে থাকবে ও নতুন নতুন প্রজাতি সম্পর্কে ।