তুরস্কের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ফুয়াদ ওকতাই বলেছেন, লিবিয়ার জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকার চাইলে দেশটিতে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে আঙ্কারা। এর আগে তুর্কি প্রেসিডেন্টও দেশটিতে সেনা পাঠানোর কথা বলেছেন। যদিও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মহল।
ওকতাই বলেন, লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বৈধ সরকারের বিরুদ্ধে জেনারেল খলিফা হাফতারের সশস্ত্র হামলা প্রতিহত করার লক্ষ্যে সেদেশে সেনা পাঠাতে চায় তুরস্ক।
এর আগে গত মঙ্গলবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টিআরটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে হুমকির সুরে বলেছিলেন, “লিবিয়ায় সেনা পাঠাতে তুরস্ক কারো কাছ থেকে অনুমতি নেবে না।”
ইরানি গণমাধ্যম পার্সটুডে বলছে, কিন্তু মুখে তুরস্ক সরকার যতই খলিফা হাফতারের হামলা প্রতিহত করার কথা বলুক, বাস্তবে লিবিয়ায় সেনা পাঠানোর প্রচেষ্টার পেছনে আঙ্কারার ভিন্ন উদ্দেশ্য কাজ করছে।
গত মাসে লিবিয়ার জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকারের প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ সারাজের আঙ্কারা সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে তেল ও নিরাপত্তা খাতে দুটি সহযোগিতা চুক্তি সই হয়। ওই চুক্তির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিবাদ উঠলেও তা উপেক্ষা করে তুর্কি জ্বালানি মন্ত্রী ফাতিহ দোনমেজ ঘোষণা করেন, দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী লিবিয়ায় তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ করবে তুরস্ক।
এদিকে, লিবিয়ার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের আগে উত্তর সাইপ্রাসের স্বঘোষিত সরকারের প্রতি সমর্থনের অজুহাতে তুরস্ক ভূমধ্যসাগরে নিজের উপস্থিতি জোরদারের চেষ্টা করে আসছিল। কিন্তু ভূমধ্যসাগরের পূর্ব উপকূলে তুরস্কের তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের এই তৎপরতার বিরুদ্ধে গ্রিস, সাইপ্রাস, এমনকি মিশর পর্যন্ত প্রতিবাদ জানিয়েছে। লিবিয়ার সঙ্গে তুরস্কের স্বাক্ষরিত সাম্প্রতিক চুক্তির বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমেরিকাও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, লিবিয়ার চলমান নাজুক অবস্থার মধ্যে তুরস্ক দেশটিতে সেনা পাঠালে যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যে আবারো আইএসের মতো উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান হতে পারে।