নিরাপত্তার জন্য ‘হুমকি হিসেবে বিবেচিত’ করে হংকংয়ের রাজনৈতিক নেতাদের পদচ্যুত করার অনুমোদন দেয় চীন। চীনের ন্যাশনাল পিউপিল’স কংগ্রেসের স্টান্ডিং কমিটির এই আইন অনুসরণ করে চার নেতাকে পদচ্যুত করে। এর ফলে চার সহকর্মীকে পদচ্যুত করার প্রতিবাদে একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আইনপ্রণেতারা।
স্থানীয় সময় বুধবার তারা এই ঘোষণা দেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
চীন জানিয়েছে, আইনপ্রণেতারা যদি হংকংয়ের স্বাধীনতাকে সমর্থন, চীনের সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার, নিজেদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে বিদেশি শক্তিকে আহ্বান কিংবা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করেন তাহলে তাদের অযোগ্য ঘোষণা করা হবে। ওই প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, আদালতের অনুমোদন ছাড়াই সরাসরি হংকং সরকার এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আইনপ্রণেতাদের অযোগ্য ঘোষণা করতে পারবে। এই আইন অনুসরণ করে বুধবার চার আইনপ্রণেতাকে পার্লামেন্ট থেকে বহিষ্কার করে হংকং সরকার।
এর প্রতিবাদে গণতন্ত্রপন্থী আইনপ্রণেতা শিবিরের আহ্বায়ক উ চি-ওয়াই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আজ আমরা আমাদের অবস্থান থেকে পদত্যাগ করবো কারণ আমাদের সহযোগী, আমাদের সহকর্মীদের কেন্দ্রীয় সরকারের নিষ্ঠুর পদক্ষেপের মাধ্যমে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।’ হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আইনপ্রণেতা শিবিরের আহ্বায়ক উ চি-ওয়াই বলেছেন, আমরা বিশ্বকে আর বলতে চাই না যে এখানে এক দেশ দুই নীতি চালু আছে। এই নীতির আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামে আগামী দিনে আমাদের আরও অনেক কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে জানি, কিন্তু আমরা কখনওই কোনও অবস্থাতেই হাল ছেড়ে দেবো না।’
হংকংয়ের ৭০ আসনের পার্লামেন্টে গণতন্ত্রপন্থী আইনপ্রণেতাদের রয়েছে ১৯টি আসন। এদের কাউকে অযোগ্য ঘোষণা করা হলে তারা সকলেই গত সোমবার গণ পদত্যাগের হুমকি দেন।
উল্লেখ্য, গত জুনে চীন সরকার হংকংয়ের জন্য নতুন নিরাপত্তা আইন কার্যকর করলে অঞ্চলটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। গণতন্ত্রপন্থীরা চীন সরকারের ওই আইনকে স্বাধীনতা খর্বের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখে থাকে। ব্যাপক বিক্ষোভের পাশাপাশি ওই আইনের জেরে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামসহ বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞারও কবলে পড়েছেন। তবে এসব বিক্ষোভ ও নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত আমলে নিচ্ছে না বেইজিং।