ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর লালবাগে ভাসমান হকার হাফিজ (১৩) হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত চার কিশোরকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর লালবাগ থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা সকলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদের নাম প্রকাশ করা হলো না।
প্রসঙ্গত, গত ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ (শুক্রবার) রাত ০৯ টায় অজ্ঞাতনামা অপরাধীরা লালবাগ থানার ৪৬ নং ডুরি আঙ্গুল লেইনের চারতলা বিশিষ্ট একটি বাড়ির ছাদে ভিকটিম মোঃ হাফিজ ওরফে প্যাপা (১৩) এর দুই হাত পাটের রশি দ্বারা বেঁধে ধারালো চাকু দিয়ে গলা কাটে ও পেটের নাড়িভুঁড়ি বের করার মাধ্যমে হত্যা নিশ্চিত করে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়। এ মামলা তদন্ত শুরু করে লালবাগ থানা পুলিশ।
লালবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম আশরাফ উদ্দিন ডিএমপি নিউজকে বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ হত্যা মামলার ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। গত ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ (শনিবার) রাজধানীর লালবাগ থানার ডুরি আঙ্গুল লেইন, নবাবগঞ্জ ও শেখ সাহেব বাজার এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত অপ্রাপ্ত বয়স্ক ০৪ কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত হতে হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত ২টি চাকু উদ্ধার করা হয়।
লালবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) খন্দকার মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, (পিপিএম) বলেন, ভিকটিম ও গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তরা সমবয়সী হওয়ায় একই সাথে চলাফেরা করতো। ঘটনার আগের দিন খেলাধুলার এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তদেরকে ভিকটিম গালমন্দ কর। এ কারণে গত ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৯:০০টায় গ্রেফতারকৃতরা ক্ষিপ্ত হয়ে সুকৌশলে ভিকটিমকে ডুরি আঙ্গুল লেইনের চারতলা বিশিষ্ট একটি বাড়ির ছাদে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিম মোঃ হাফিজ এর দুই হাত বেঁধে ধারালো চাকু দিয়ে গলা কাটে ও পেটের নাড়িভুঁড়ি বের করে হত্যা করে। গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিমের লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী পাঁচতলা বিশিষ্ট বাড়ির ছাদের বাথরুমে উলঙ্গ অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। পুলিশ সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে এবং ঘটনাস্থল হতে ভিকটিমের পরনের একটি হলুদ রংয়ের ছেড়া রক্তমাখা টি-শার্ট, রক্তমাখা জিন্সের প্যান্ট ও একজোড়া প্লাস্টিকের স্যান্ডেল, আংশিক রক্তমাখা একটি পাটের রশি, একটি সাদা রংয়ের রক্তমাখা প্লাস্টিকের বস্তা, potato crackers চিপস একটি, রক্তমাখা বালুযুক্ত প্লাস্টিকের ছাই রংয়ের রেক্সিন ০১টি, নারিকেল গাছের পাতার সলা দিয়ে তৈরি ঝাড়ু ০১টি ও এক লিটার প্লাস্টিকের খালি বোতল ০৩টি সহ একটি সিমেন্টের বস্তা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদেরকে গত ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা এ হত্যার ঘটনায় দায় স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।