ডিএমপি নিউজঃ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ইন্টার পার্লামেন্টরি ইউনিয়ন (আইপিইউ) সম্মেলন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কঠোর ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিয়ে সফলভাবে সমাপ্ত করতে সহযোগিতা করেছিল। যার ফলে সম্মেলন শেষ হবার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্যরা ডিএমপি’র নিরাপত্তা নিয়ে প্রশংসার সাথে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছে। ডিএমপি শুধু ঢাকা ও বাংলাদেশের গর্ব নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে লেখা থাকবে তাদের নাম।
আজ সকাল ৯ টায় সবুজবাগ থানার নতুন বহুতল ভবন নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপিকে নিয়ে এমন মন্তব্য করেন ঢাকা-৯ আসনের সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ। সবুজবাগ থানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন পিপিএম (বার)।
আইপিইউ সম্মেলনের নিরাপত্তা নিয়ে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আইপিইউ সম্মেলন বাংলাদেশের ইতিহাসে অনেক বড় একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন। আইপিইউ সভাপতি হিসেবে সম্মেলন শুরুর আগে আমাদের কাছে অনেক থ্রেট এসেছিল সম্মেলনের আয়োজন না করতে। অনেক ঝুঁকি থাকার পরও সকল থ্রেট এ্যানালাইসিসি করে ডিএমপি সম্মেলনের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় এবং তারা সফলও হয়। যার ফল এখনও আমরা পাচ্ছি বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্যদের ফোন কলের মাধ্যমে।’
পুলিশের সেবায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, আগে যেভাবে পুলিশ কাজ করত, এখনকার পুলিশ অনেক ভিন্ন। বর্তমান পুলিশ কমিশনার অত্যন্ত ডাইনামিক একজন ব্যক্তি। পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির কাজ করেছেন তিনি। বাংলাদেশের জনগণের তুলনায় পুলিশ অনেক কম। পরিসংখ্যান মতে সারাদেশে ১৪০০ নাগরিকের জন্য একজন পুলিশ। আর ঢাকায় এক হাজার নাগরিকের জন্য রয়েছে মাত্র একজন পুলিশ। যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। পুলিশ জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য কাজ করছে। তাদের কাজ করার জন্য ছিল না ভালো পরিবেশ বা থানা। ঢাকা-৯ আসনের মুগদা, সবুজবাগ, খিলগাঁও থানাসহ রামপুরা ও শাহজাহানপুর থানার জন্য নিজস্ব জায়গার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এতে করে সেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘পুলিশের কাজ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানি করা নয়। তাদের কাজ জননিরাপত্তা বিধান করা, জনগণের সেবা নিশ্চিত করে প্রত্যাশা পূরণ করা। তেমনি করছে পুলিশ সদস্যরা। আইনের উর্ধ্বে যেমন কেউ নয়, তেমনি নিম্মেও কেউ নয়। আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে যদি কেউ মাদক, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসসহ কোন অনৈতিক কাজ করে, তাহলে পুলিশকে বলবো তাকে আগে গ্রেফতার করুন। পুলিশের কাছে আমাদের কোন রাজনৈতিক চাহিদা নেই। শুধু বলবো আইন শৃংখলা পরিস্থিত ভালো রাখতে হবে। পুলিশ একা নয়, আমরা নাগরিক হিসেবে তাদের পাশে আছি।’
ঢাকা-৯ আসনের সাংসদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন,‘ মাননীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সবুজবাগ থানার জন্য ৫০ শতক জায়গা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সবুজবাগ থানা ছাড়াও তিনি রামপুরা, মুগদা, শাহজাহানপুর ও খিলগাঁও থানার জন্য নিজস্ব জায়গা পাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এজন্য আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। নিজস্ব থানা ভবনের মাধ্যমে নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ফোর্সের আবাসন সমস্যাও সমাধান হবে। থানায় যেয়ে যাতে মানুষ ভালো ভাবে কথা বলতে পারে এবং কর্তব্যরত অফিসার তাঁর কথা শুনে আইনানুগ সহযোগিতা করতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।’
সিআইএমএস (CIMS) ডাটাবেজ সম্পর্কে কমিশনার বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগে ডিএমপি’র সদস্যরা ঢাকা মহানগরীর নাগরিকদের তথ্য ডাটাবেজে সংরক্ষণ করছে। কোন রকম সরকারী অর্থ ছাড়াই আমরা নিজেদের প্রচেষ্ঠায় ১৯ লাখ পরিবারের ৮০ লাখ সদস্যের তথ্য সিআইএমএস ডাটাবেজে সংরক্ষণ করেছি। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে এই ডাটাবেজ অনেক কাজে আসছে। এর ফলে আমাদের অপরাধ ডিটেকশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে গত ২ বছরে আমরা প্রায় দেড় লাখ উঠান বৈঠক করেছি। দেশের ও সমাজের উন্নয়নে আপনাদেরকে আমরা সবসময় পাশে পেতে চাই।’
ডিএমপি’র মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ থানার পাশে ৫০ শতক নিজস্ব জায়গায় ৮ তলা বিশিষ্ট আধুনিক সকল সুবিধা সম্বলিত থানা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। এর ফলে সবুজবাগ থানা এলাকায় পুলিশি সেবার মান অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।