পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জনগণের কাছে এখন আর স্বপ্ন নয়, এটা এখন বাস্তব। পদ্মাসেতু দিয়ে যেদিন প্রথম যানবাহন চলাচল করবে সেইদিনই সেতুর উপর দিয়ে রেল চলাচল করবে সেই লক্ষ্য নিয়ে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আজ রোববার দুপুরে রেলভবনের সম্মেলন কক্ষে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঋণচুক্তি স্বাক্ষরসহ প্রকল্পের সার্বিক অবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক এ কথা জানিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চীনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগের ফলে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। রেলপথ চালু হলে এসব জেলাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব মানুষের উন্নয়ন হবে। খুব দ্রুত রেলপথের কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
রেলপথমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ঢাকা হতে যশোরের দুরত্ব ৩৫৬ দশমিক ৪০ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এ দুরত্ব দাঁড়াবে মাত্র ১৭০ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার। অর্থাৎ ১৮৫ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দুরত্ব কমে যাবে। বর্তমানে ঢাকা হতে খুলনার দূরত্ব ৪১২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকা হতে খুলনার দূরত্ব দাঁড়াবে ১৯৯ দশমিক ১৩ কিলোমিটার। অর্থাৎ এ পথের দুরত্ব কমবে ২১৩ দশমিক ২৭ কিলোমিটার। বর্তমানে ঢাকা থেকে ট্রেনে চড়ে খুলনা যেতে সময় লাগে ৯ ঘন্টা, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সময় লাগবে মাত্র ৪ ঘন্টা।
রেলপথমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালের ৮ আগস্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড’ এর সঙ্গে ২৭ হাজার ৬৫২ কোটি ৫৭ লাখ টাকার কমার্শিয়াল চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পের আওতায় মোট ২১৫ দশমিক ২২ কি.মি রেললাইন নির্মাণ করা হবে, যার মধ্যে প্রায় ২৩ কি.মি উড়াল (এলিভেটেড) রেলপথ। এমনকি কেরানীগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনটিও উড়াল রেলপথে নির্মিত হবে। এ সেকশনে ১৪টি নতুন রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ করা হবে এবং বিদ্যমান ৬টি স্টেশন নবায়ন করা হবে। এছাড়া, এ সেকশনে নতুন ট্রেন পরিচালনার জন্য ১০০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ করা হবে।
গত ২৭ এপ্রিল বেইজিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহিদুল হক ও এক্সিম ব্যাংক অব চায়নার ভাইস প্রেসিডেন্ট সুন পিং ২ হাজার ৬৬৭ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের (সমতুল্য ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা) এই ঋণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।-বাসস